

২০২০ সালে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত আইন সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। সে কারণেই একবার নয়, পর পর তিনবার বাতিল হয়ে গেল ভিসার আবেদন। নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করছে বলে এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে ক্ষোভ উগরে দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান অর্থনীতিবিদ-সমাজকর্মী ক্ষমা সাওয়ন্ত।
সিয়াটল সিটি কাউন্সিলের প্রাক্তন সদস্য ক্ষমা। তাঁর অভিযোগ, মায়ের অসুস্থতার কারণে গত বছর মে ও জুন মাসে বেঙ্গালুরুতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ভিসার আবেদন জানান তিনি। কিন্তু দু’বারই বাতিল হয় তাঁর আবেদন। এরপর এবছর জানুয়ারিতে ফের একই কারণে জরুরী ভিত্তিতে ভিসার আবেদন করেন ক্ষমা এবং তাঁর স্বামী কেলভিন প্রিস্ট। কেলভিনের ভিসা মঞ্জুর হলেও, ভিসা পাননি ক্ষমা।
এরপরেই এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে ক্ষমার অভিযোগ, কনসুলেটের এক আধিকারিক তাঁকে জানিয়েছেন, তিনি মোদী সরকারের বাতিলের তালিকায় রয়েছেন। ক্ষমা লিখেছেন, “আমার উপর রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে। কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না”। তাঁর দাবি, শুধু তিনি নন, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলেছেন, সকলেই ‘রাজরোষে’ পড়েছেন।
বারবার ভিসা বাতিলের প্রতিবাদে কনসুলেটের বাইরে নিজের সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে প্রতিবাদ দেখান ক্ষমা। এদিকে কারও নাম না করে পাল্টা পোষ্ট করা হয়েছে কনসুলেটের পক্ষ থেকে। তাতে বলা হয়েছে, “কাজের সময়ের পর এক দল বিক্ষোভকারী কনসুলেটের চত্বরে ঢুকে পড়ে গোলমাল বাধাচ্ছিলেন। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি পুলিশকে জানাতে বাধ্য হই”। যদিও ক্ষমার দাবি, শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিল সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেছিলেন ক্ষমা সাওয়ন্ত। এমনকি এই দুই বিলের বিরুদ্ধে সিয়াটলের সিটি কাউন্সিলে একটি নিন্দা প্রস্তাবও পাশ করান। সেই সময় সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে জাতি বৈষম্যের অভিযোগও এনেছিলেন ক্ষমা। তাঁর আন্দোলনের জেরেই আন্তর্জাতিক মহলের নজর পড়ে বিষয়টিতে বলে মনে করা হয়। তবে বিষয়টি মোটেও ভালো চোখে নেয়নি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। এই কারণেই মোদী সরকারের বাতিলের তালিকায় পড়েছেন বলে মনে করছেন ক্ষমা।
অন্যদিকে, ক্ষমার ভিসা প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন মহারাষ্ট্রের দলিত নেতা তথা বি আর আম্বেডকরের নাতি প্রকাশ আম্বেডকর। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “বৈষম্যের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করছেন মোদী সরকার কি তাঁদের বিরোধিতা করছেন? উত্তর হল হ্যাঁ। দেশে হোক বা বিদেশে, মোদী সরকার তাঁদের বিরোধিতা করে”।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন