

সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেছন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক (Rishi Sunak), স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ (Sajid Javid), পরিবহন মন্ত্রী লরা ট্রট (Laura Trott) এবং পরিবার ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের মন্ত্রী উইল কুইন্স (Will Quince)। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই সঙ্কটের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
কেন এই অনাস্থা? জানা যাচ্ছে, যৌন কেলেঙ্কারি–সহ একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ২০১৯ সালে ক্রিস পিনচার নামে বর্ষীয়ান এক রাজনীতিককে বড় পদে বসান জনসন। এই বিষয়ে জনসন দাবি করেন, পিনচারের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা কিছুই জানতেন না তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার, সরকারি মুখপাত্র সাইমন ম্যাক-ডোনাল্ড দাবি করেন, জনসন মিথ্যা কথা বলেছেন। যা নিয়ে শোরগোল উঠতেই প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইস্তফা দিয়েছেন ব্রিটেনের চার মন্ত্রী।
প্রথমে, মঙ্গলবার ব্রিটিশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটে ইস্তফা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাভেদ। তার ঠিক ৯ মিনিট পর বরিস মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন ঋষি। দু’জনই ইস্তফাপত্রে তুমুল আক্রমণ শানান বরিসের দিকে।
টুইটারে জাভেদ লেখেন, 'স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এটা ঠিক একটা গুরত্বপূর্ণ কাজের সুযোগ হয়েছে আমার। কিন্তু নিজের হৃদয়ের বিচারে (বরিসের সরকারে) কাজ চালিয়ে যেতে পারব না। এ জন্য আমি দুঃখিত।'
একইসঙ্গে, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জাভেদ লিখেছেন, 'আমার কাছে এটা পরিষ্কার যে আপনার নেতৃত্বে পরিস্থিতির বদল হবে না। যার ফলে আপনি আমার আস্থা হারিয়েছেন।'
এর ৯ মিনিটের মাথায় পদত্যাগের কথা জানান ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক। প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া ইস্তফাপত্র টুইটে জুড়ে দেন তিনি। টুইটে ঋষি লিখেছেন, ‘জনগণ আশা করে সরকার সঠিকভাবে, দক্ষতার সঙ্গে এবং গুরুত্ব সহকারে পরিচালিত হবে।’ এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, আমরা এ ভাবে এক সঙ্গে চলতে পারি না।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘এটা এখন আমার কাছে স্পষ্ট যে, আমরা মৌলিকভাবেই ভিন্ন পথের পথিক।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যার রেশ কাটার আগেই, বরিসের অস্বস্তি বাড়িয়ে বুধবার আরও দুই মন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন পরিবহন মন্ত্রী লরা ট্রট ও পরিবার ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের মন্ত্রী উইল কুইনস।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে, বুধবার কুইনস জানিয়েছেন, ‘আমার সামনে পদত্যাগ করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।’ একই দাবি করেন লরা ট্রট। তিনি জানান, এই সরকারের উপর তিনি আর ভরসা রাখতে পারছেন না, তাই তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে, ক্রিজে টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছেন বরিস জনসন। ঋষি সুনকের জায়গায় অনুগত নাদিম জাহাউইকে এনেছেন তিনি। অর্থাৎ, ব্রিটেনের নয়া অর্থমন্ত্রী হয়েছেন নাদিম জাহাউই। আর নয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন স্টিভ বার্কলে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন