মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে চীন। এছাড়া সব ধরনের আধিপত্যবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করতে নিজেদের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন।
তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েই কথা বলেছেন এমন না; তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের হয়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বের কণ্ঠস্বর হয়ে কথা বলছেন।
বাংলাদেশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য ঘিরে চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন ওয়াং ওয়েনবিন।
ঢাকাস্থ চীনের দূতাবাস বুধবার (১৪ জুন) তাদের ফেসবুক পেজে দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে দেওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনের সে সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ প্রচার করেছে।
গ্লোবাল টাইমসের পক্ষ থেকে ওয়াং ওয়েনবিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বিভ্রান্তিকর এবং এই নিষেধাজ্ঞা একটি খেলার মতো।
তিনি বলেছেন, যে কোনো দেশের সরকার পতনের ক্ষমতা তাদের রয়েছে। বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পায় না এবং তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন যেন বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানকারী দেশ থেকে কিছু কেনা না হয়। এ বিষয়ে চীনের মন্তব্য কী?
এর জবাবে ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো আমাদেরও নজরে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে একটি দেশ নিজেদের বর্ণবৈষম্য, বন্দুক সহিংসতা ও মাদকের বিস্তারের সমস্যার দিকে চোখ বন্ধ রেখে দীর্ঘ দিন ধরে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অজুহাতে বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের জনগণেরই বলিষ্ঠ অবস্থানের কথা বলেননি, তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশের বিশেষত উন্নয়নশীল বিশ্বের মনের কথা বলেছেন।
ওয়াং ওয়েনবিন আরও বলেন, চীন ও বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা, স্বাধীন অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখা এবং জাতীয় বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নের পথ অবলম্বনে আমরা দৃঢ়ভাবে দেশটিকে সমর্থন করি।
সব ধরনের আধিপত্যবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরোধিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা জোর দেওয়া আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা, জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণের মৌলিক নিয়ম এবং মানবজাতির জন্য অভিন্ন ভবিষ্যতের একটি কমিউনিটি গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।