কানাডায় গত মাসেই পরিত্যক্ত এক স্কুলে ২১৫টি শিশুর কবর আবিষ্কৃত হওয়ায় শোরগোল পড়েছিলো। এবার কানাডারই অন্য এক বন্ধ হয়ে যাওয়া বোর্ডিং স্কুলে পাওয়া গেল আরও ৭৫১ টি কবর। উপজাতি শিশুদের জন্য তৈরি হওয়া বোর্ডিং স্কুল বন্ধ হয়ে যায় কয়েক বছর আগে। বৃহস্পতিবার কানাডা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে।
কানাডার প্রশাসনিক সূত্র অনুসারে ১৮৯৯ সালে তৈরি হওয়া এই ক্যাথলিক বোর্ডিং স্কুল বন্ধ হয়ে যায় গত ১৯৯৭ সালে। সাস্কাটেকওয়ানে স্থিত এই স্কুলের নাম ছিলো মেরিভিয়াল ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল। এই বোর্ডিং স্কুল সংলগ্ন অঞ্চল থেকেই ৭৫১ টি কবর সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া যায়। অতীতে এই সাস্কাটেকওয়ান অঞ্চলেই সবথেকে বেশি বোর্ডিং স্কুল ছিলো বলেও জানা গেছে।
গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে ফেডারেশন অফ সভারিন ইন্ডিজিনিয়াস ফার্স্ট নেশনস-এর প্রধান ববি ক্যামেরন জানান – মানবতার বিরুদ্ধে এ এক ঘৃণ্য অপরাধ। উপজাতি হিসেবে জন্ম নেওয়া শিশুদের সঙ্গে সংগঠিত এই অপরাধের কোনো ক্ষমা হয়না। ক্যামেরন আরও জানান – এই ধরণের সব স্কুলে তল্লাশি চালানো হবে এবং আমাদের আশংকা এই ধরণের আরও ঘটনা সামনে আসবে। তবে যতক্ষণ না পুরো বিষয়টি সামনে আসবে ততক্ষণ আমরা থামবো না।
গতকালের ঘটনার মাস খানেক আগে কানাডারই অন্য এক বোর্ডিং স্কুলে একিভাবে ২৫১টি কবর খুঁজে পাওয়া গেছিলো। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সেই স্কুলের নাম ছিলো কামলুপ্স ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল। এই স্কুল বন্ধ হয়ে যায় ১৯৭৮ সালে।
কানাডার ইতিহাসে এই ঘটনাকে কালো অধ্যায় বলেই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে উপজাতি শিশুদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে এইসব স্কুলে পাঠানো হত। এই স্কুলগুলি পরিচালনা করতো সরকার এবং চার্চ। যেখানে তাদের নিজেদের সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে বাধ্য করা হত। এই সব স্কুলের শিশুরা শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হত এবং যেসব শিশুরা মারা যেত তাদের এইভাবে কবর দিয়ে দেওয়া হত। কিন্তু এই সংখ্যা প্রকৃতই কত তা সম্ভবত কখনোই জানা যাবেনা।
এই প্রসঙ্গে কাউইসেস ফার্স্ট নেশন প্রধান ক্যাডমাস ডেলরমে জানিয়েছেন এই কবরগুলো সম্ভবত আগে চিহ্নিত ছিলো। কিন্তু যারা এই স্কুল চালাতো, সেই রোমান ক্যাথলিক চার্চ ১৯৬০ সালে চিহ্নগুলো সরিয়ে ফেলে। এই বিষয়ে চার্চের ভূমিকার জন্য পোপের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত বলে মনে করেন ডেলরমে। তিনি আরও জানিয়েছেন ৪৪ হাজার স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে সংস্থা।
গত মাসে রাষ্ট্রপতি জাস্টিন ট্রুডেউ পোপ ফ্রান্সিসকে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, একজন ক্যাথলিক হিসেবে এই ঘটনার জন্য তিনি লজ্জিত।
- with IANS input
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।