প্রতিদিনই বিলিওনেয়ার, করোনাকালে মুনাফা 'দখল' করেছে ব্যবসায়ীরা: রিপোর্ট

করোনাকালে নতুন বিলিওনেয়ার হয়েছেন ৫৭৩ জন। চলতি বছরে ১০০ কোটি ডলারের মালিক হবেন আরও ২৬৩ জন। দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকের আগে অক্সফ্যামের এক রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।
ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকীছবি সৌজন্য - এ ই এ

মহামারী করোনার জেরে সারাবিশ্বে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬৩ লক্ষের বেশি মানুষ। স্বজন হারিয়ে, রোজগার হারিয়ে যন্ত্রণায় কাতরেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন। আর এই সময়কালে মানুষের যন্ত্রণার ‘সুফল’ প্রতিদিন নিজেদের ঘরে তুলেছেন বিশ্ব কারবারীরা। যার জেরে প্রতি ৩০ ঘণ্টা অন্তর একজন করে নতুন ব্যাবসায়ী ১০০ কোটি ডলারের মালিক (বিলিওনেয়ার) হয়েছেন। করোনাকালে নতুন বিলিওনেয়ার হয়েছেন ৫৭৩ জন। চলতি বছরে ১০০ কোটি ডলারের মালিক হবেন আরও ২৬৩ জন। সোমবার, দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকের আগে অক্সফ্যামের একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।

অক্সফ্যামের নয়া রিপোর্টের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘যন্ত্রণার সময়ে মুনাফা’। যে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘কোভিড মহামারীকাল ছিল বিলিওনেয়ারদের জন্য ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়।’ কেননা এই সময়কালে একশ্রেণীর ব্যবসায়ী পুঁজির পাহাড় করছেন।

বর্তমানে বিশ্বে মোট বিলিওনেয়ারের সংখ্যা ২৬৬৮ জন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ১০ জনের সম্পদের পরিমাণ এখন বিশ্বের মোট জনসংখ্যার আয়ের দিক থেকে তলায় থাকা ৪০ শতাংশের মানুষের মোট সম্পদের থেকেও বেশি। এই ৪০ শতাংশ আসলে ৩১০ কোটি। অর্থাৎ, ধনী ১০ জন ব্যবসায়ীর সম্পদ ৩১০ কোটি মানুষের সম্পদের থেকে বেশি।

জানা গেছে, ২০২০ সালের পর থেকে খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে প্রায় ৬২ জন বিলিয়নেয়ার হয়েছেন। ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে নতুন করে বিলিয়নেয়ার হয়েছেন ৪০ জন। মূলত, মহামারীকালে দৈনন্দিন খরচের পাশাপাশি ওষুধের জন্য মানুষকে যে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়েছে তাতেই ব্যবসায়ীরা ধনী হয়েছেন। এছাড়া, তথ্য প্রযুক্তি জগতে টেসলার ইলন মাস্ক, অ্যামাজনের জেফ বেজোস এবং মাইক্রোসফটের বিল গেটসের মোট সম্পদ গত ২ বছরে ৪৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৯৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

এ প্রসঙ্গে, অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনালের অধিকর্তা গ্যাব্রিয়েলা বুচার জানিয়েছেন, 'বিলিওনেয়ারদের সম্পদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে এই জন্য নয় যে তারা আগের থেকে কঠোর পরিশ্রম করছেন। এই সম্পদ বৃদ্ধির কারণ হলো চরম ঔদ্ধত্য এবং অপ্রতিহতভাবে তারা দশকের পর দশক এই ব্যবস্থাকে লুট করেছে এবং এখন তার সুফল ঘরে তুলছে।'

একইসঙ্গে, অক্সফ্যামের রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে, চলতি বছরে নতুন করে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ চরম দারিদ্র্যে চলে যেতে পারেন। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের শেষে ৮৬ কোটি মানুষ দৈনিক ১.৯০ ডলারের (ভারতীয় টাকার অঙ্কে ১৪৭ টাকা) কম আয় করবেন বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।

ছবি প্রতীকী
Inequality: দেশে বাড়ছে বৈষম্য, মাসে ২৫ হাজার টাকা উপার্জনকারীর সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ - রিপোর্ট

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in