Bangladesh: বাংলাদেশে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন, কারখানায় আগুন, নিহত ২

People's Reporter: ঢাকার গাজীপুর, মিরপুর, আশুলিয়া, সাভার ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মজুরি বৃদ্ধির দাবি এই আন্দোলন করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে বিক্ষোভরত পোষাক কারখানার শ্রমিকরা
বাংলাদেশে বিক্ষোভরত পোষাক কারখানার শ্রমিকরা ছবি জি কে সাদিক
Published on

 বাংলাদেশে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রায় সপ্তাহ জুড়ে টানা আন্দোলন করছে ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পোশাক শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্য এক শ্রমিকের আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকার গাজীপুর, মিরপুর, আশুলিয়া, সাভার ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মজুরি বৃদ্ধির দাবি এই আন্দোলন করে যাচ্ছে।

আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, আগামী (২০২৪) বছরের শুরুতে নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী তাদের বেতন ২৩ হাজার টাকা হওয়ার কথা। এজন্য চলতি মাসে তাদের গ্রেড ঠিক করার কথা; কিন্তু মালিকপক্ষ গ্রেড পরিবর্তন ও বেতন বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তারা (মালিক পক্ষ) আগের বেতন বহাল রেখেই কারখানা চালাতে চান। 

আন্দোলনরত এক শ্রমিক জানান, বর্তমানে তারা ৮ হাজার টাকা বেতন পান। নতুন মজুরি অনুযায়ী, তাদের বেতন ২৩ হাজার টাকা হওয়ার কথা; কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন বাড়িয়ে ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা দিতে চান। গ্রেড পরিবর্তন করে তাদের এ বেতন বাড়াতে হবে; কিন্তু মালিকপক্ষ গ্রেড পরিবর্তনসহ নতুন মজুরি বাড়ানোর ব্যাপারে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেনি। এজন্য তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। 

আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, ‘এখন ৮ হাজার টাকার মতো বেতন পাই। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্বগতি, এ দিয়া চলা যায় না। তাই বেতন বাড়ানোর জন্য সবাই সড়কে আইছে।’

এদিকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরে চলমান শ্রমিক আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২।

আন্দোলনরত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ৩০ অক্টোবর গাজীপুরে অনন্ত গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। কারখানাটির নাম এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সপ্তম দিনের মতো ৩০ অক্টোবর সকাল থেকেই কোনাবাড়ী ও আশপাশের এলাকায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর মধ্যে গাজীপুরের বাসন এলাকায় আহত এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে কোনাবাড়ী এলাকায় শ্রমিকেরা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। এর মধ্যেই ওই এলাকায় এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

ঢাকার মিরপুর, আশুলিয়া, সাভার ও নারায়ণগঞ্জেও পোশাক শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে গত কয়েক মাস ধরেই মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পোশাক শ্রমিকরা। এছাড়াও পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও দেশগুলোও দেশটির কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে আসছিল।

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পোশাক শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ২৩ হাজার টাকা মজুরি দাবি করা হলেও এখনো পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের ভ্রক্ষেপ করেনি সরকার ও মালিক পক্ষ। অন্যদিকে সামনে নতুন বছরের শুরুতে মজুরি বৃদ্ধির কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত গ্রেড পরিবর্তনসহ নতুন মজুরি বাড়ানোর ব্যাপারে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেনি মালিক পক্ষ। ফলে মজুরি বৃদ্ধির এই দাবি মাঠে গড়িয়েছে।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in