Bangladesh: বাংলাদেশে তদারকি সরকারের অধীনে নিবার্চন চায় বাম জোট

আগামী ১১ আগস্ট একই দাবিতে রাজধানী ঢাকার পুরাতন পল্টন মোড়ে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাম জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
বাংলাদেশে বাম জোটের ডকে সমাবেশ
বাংলাদেশে বাম জোটের ডকে সমাবেশছবি - জি কে সাদিক

বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট সম্প্রতি এই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি বামপন্থী এই রাজনৈতিক জোটটি। জোটগত আন্দোলনের বাইরে দলগুলো তাদের নিজস্ব ব্যানারেও কর্মসূচি পালন করছে।

আগামী ১১ আগস্ট একই দাবিতে রাজধানী ঢাকার পুরাতন পল্টন মোড়ে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাম জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

গত ০২ আগস্ট (বুধবার) বিকেলে রাজধানী ঢাকার পুরাতন পল্টন মোড়ে এক সমাবেশে জোটের নেতারা বলেন, প্রায় সব বিরোধী দল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। কিন্তু সরকার তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে এ আন্দোলন নির্মমভাবে দমন করছে।

বাম জোটের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকার শুধু মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, আওয়ামী লীগের তথাকথিত ‘শান্তি সমাবেশে’ দলটির নেতারা যে ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে, দেশকে তাঁরা একটি সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে চাইছেন।

অবিলম্বে বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং সরকারের ইস্তফার দাবি জানিয়ে জোটের নেতারা বলেন, সরকার আজ দেশের যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তার অধীনে নির্বাচন আয়োজন করা ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো সমাধান নেই।

সমাবেশ থেকে বাম নেতৃবৃন্দ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল নেই। কারণ, ডলার নেই। সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট, মেগা প্রকল্পে মেগা লুটপাট ও অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি, অর্থ পাচার, ব্যাংক লোপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ দুর্দশাগ্রস্ত। এ পরিস্থিতির জন্য সরকারের আমদানিনির্ভর জ্বালানিনীতি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট দায়ী বলেও উল্লেখ করেন বাম জোটের নেতারা।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ- মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। এ ছাড়া সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাসদের (মার্ক্সবাদী) নির্বাহী সমন্বয়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য।

বাংলাদেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের পাশাপাশি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোও একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

বর্তমান সরকারের পতন ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আগামী ১৮ আগস্ট ঢাকার শাহবাগে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।

গত ০১ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর হামলা-মামলা-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে নতুন এই আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত মশাল মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র জোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘গত ১৪ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে আমাদের নাভিশ্বাস উঠছে। শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। নানান স্তরে আজকে বৈষম্য। এর পেছনে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী চরিত্রই দায়ী। আমাদের ভোটের অধিকার ছলে বলে কৌশলে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দিকে দিকে যখন আন্দোলন দানা বাঁধছে, তখন এই সরকার বিভিন্নভাবে মানুষকে দমন করার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে হামলা করছে, হয়রানিমূলক মামলা দিচ্ছে। নানাভাবে নিষ্পেষণ কায়েম করার চেষ্টা করছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের মিছিল আরও দীর্ঘ হবে। সবাইকে আমরা আওয়ামী দুঃশাসনবিরোধী এই মিছিলে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাই।’

চলমান ‘দুঃশাসনের’ প্রতিবাদ করতে না পারলে সামনে দুর্দিন অপেক্ষা করছে বলে উল্লেখ্য করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আগামী ১৮ আগস্ট শাহবাগ মোড়ে ছাত্র-জনতার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সমাবেশ থেকে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের আরও তীব্র হুংকার জানাতে চাই। এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দৃপ্ত স্লোগান তুলতে চাই।’

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটে আছে, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল), বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন এবং বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in