উৎসবের মুখে আগুনে পুড়ে ছাই কাপড়ের প্রধান বাজারের ৪ হাজার দোকান; প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে পুরোপুরি আগুন নেভাতে আরো সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন
বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুনছবি - জিকে সাদিক

 বাংলাদেশে কাপড়ের অন্যতম প্রধান বাজার ঢাকার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অন্তত ৪ হাজার দোকান। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে এ আগুন লাগে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট টানা সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর সেটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, তারা অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়েছেন সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে এবং ঘটনাস্থলে প্রথম ইউনিট পৌঁছায় ৬টা ১২ মিনিটে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে পুরোপুরি আগুন নেভাতে আরো সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হওয়ার জন্য উৎসুক জনতার ভীড়, জল সংকট এবং বাতাসকে দায়ী করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন।

বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন
বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুনছবি - জি কে সাদিক

রাজধানী ঢাকার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

এদিকে বঙ্গবাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফারায় সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর দুই শতাধিক কর্মী কাজ করেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ এবং ঢাকা ওয়াসাও একসাথে কাজ করেছে।

আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পুরোপুরি তদন্তের পরই আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বলা যাবে। বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেখানে প্রায় চার হাজারের মতো দোকান আছে।

বঙ্গবাজারে আদর্শ হকার্স মার্কেট, মহানগরী ও বঙ্গ গুলিস্তান নামে তিনটি অংশ রয়েছে। রাজধানীর ব্যস্ততম এ মার্কেটে সব বয়সী নারী-পুরুষের সব রকমের পোশাক পাওয়া যায়। বঙ্গবাজারের ২১ হাজার ২৫০ বর্গফুট জায়গায় ছোট-বড় অন্তত ৪ হাজার দোকান রয়েছে।

বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন
বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুনছবি জি কে সাদিক

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের ২রা এপ্রিল বঙ্গবাজারের এই ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে। তখন ভবনে একটি ব্যানারও টাঙিয়ে দেয়া হয়েছিল। এর পর ১০ বার নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই ব্যবসা চলছিল বলে জানান তিনি।

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের আট জন কর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। তবে আগুনে এখনো পর্যন্ত নিহত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনরায় ব্যবসায় ফেরাতে প্রাথমিকভাবে ৭০০ কোটি টাকা এককালীন বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ দাবি জানান তিনি।

হেলাল উদ্দিন বলেন, এই ব্যবসায়ীদের পুঁজি বলতে দোকানের জিনিসপত্র। সেইসব পুড়ে গেলে তাদের আসলে পুঁজি বলতে সব শেষ। সব পুড়ে শেষ না করা পর্যন্ত এই আগুন নেভার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। আমাদের জানা মতে, শুধু বঙ্গবাজার কাঠের মার্কেটেই আড়াই হাজারের মতো দোকান রয়েছে। মোট পাঁচ হাজারেরও বেশি দোকান। এখানে ছোট ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান করেন। সামনে ঈদ। সবাই ঈদ কেন্দ্রিক বেচাকেনার পণ্য তুলেছেন দোকানে। এমন সময় এই অগ্নিকাণ্ড বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে এনেছে। বরাদ্দ ছাড়া তাদের আর ব্যবসায় ফেরানো সম্ভব হবে না। এখন তাদের জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, রমজানের ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসায় ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রাথমিকভাবে ৭০০ কোটি টাকা এককালীন বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন
৪ দিন পর জামিনে মুক্তি পেলেন সংবাদের শিরোনাম ও ছবির মধ্যে অসঙ্গতির জেরে ধৃত সাংবাদিক
বাংলাদেশে কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন
এবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে McDonald's! আমেরিকায় সাময়িকভাবে বন্ধ হল সকল অফিস

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in