বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থল মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশী যুবক আহত

পুলিশ জানায়, ওই যুবক গরু চোরাচালানের উদ্দেশ্যে কাঁটাতার পেরিয়ে মিয়ানমার সীমান্তে গেলে দেশটির সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে তাঁর বাম পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ পা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আহত যুবক
আহত যুবকছবি - জি কে সাদিক
Published on

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে চলমান উত্তেজনার মাঝে এবার স্থল মাইন বিস্ফোরণে অন্নথাইং তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক বাংলাদেশী যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের ৩৫নং পিলারে এই ঘটনা ঘটে। আহত অন্নথাইং তঞ্চঙ্গ্যাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়। অন্নথাইং ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের তুমব্রু হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দুপুরে ওই যুবক গরু চোরাচালানের উদ্দেশ্যে তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় ৩৫নং পিলারের কাছাকাছি কাঁটাতার পেরিয়ে মিয়ানমার সীমান্তের ৩০০ মিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে দেশটির সেনাবাহিনী-বিজিপির পুঁতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে তাঁর বাম পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ পা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আহত অন্নথাইং তঞ্চঙ্গ্যার মা ইয়াং মে চাকমা জানিয়েছেন, গরু নিয়ে ফিরে আসার পথে মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে একটি স্থল মাইনের বিস্ফোরণ ঘটে। মিয়ানমারের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে তাঁর ছেলের পা উড়ে গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ। তবে এই ঘটনায় বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এ বছরের ২৮ আগস্টে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু বাজার এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ছোড়া দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর ধুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলি বিজিবি বিওপি ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের কাছে মিয়ানমারের দুটি হেলিকপ্টার ও দুটি বিমানকে দেখা যায়।

এসব ঘটনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোকে মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। অভ্যন্তরে মর্টার শেল ছোঁড়া, সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমার থেকে নির্বিচারে বিমান, গুলি চালানো এবং আকাশপথ লঙ্ঘনের বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ জানায়।

এ ঘটনায় মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করেছে।

সীমান্তে মিয়ানমারের এমন উস্কানিমূলক আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমারের সীমান্ত বাহিনী আলোচনায় বসবে যাতে কোনো উস্কানি হলে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা যায়। এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপ। হয়তো অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তারা বিষয়টি স্বীকার করেছে।'

পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, 'বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও বিজিবি সতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের ভেতরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে । এ কারণে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে উঠতে পারেন। আমাদের নজরদারি রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সীমান্তে যাতে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি না হয় সেজন্য চেষ্টা চলছে। আমরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছি। বিজিবি বাংলাদেশের ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না।'

আহত যুবক
Bangladesh: সরকার বিরোধী 'নেতিবাচক প্রচারণা' মোকাবিলায় ভালো 'কলামিস্ট' খুঁজছে বাংলাদেশ সরকার

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in