
ঐতিহাসিক মাইসুরু দশেরা উৎসব উদ্বোধনের জন্য বুকার পুরস্কার বিজয়ী বানু মুশতাককে আমন্ত্রণ জানানোয় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কর্ণাটক বিজেপি সহ দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি। ঐতিহ্যবাহী একটি হিন্দু অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন একজন মুসলিম, এটা হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করবে বলে মনে করছে তারা। তাই এই ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না তারা।
চলতি বছরের মে মাসে প্রথম কন্নড় লেখিকা হিসেবে সাহিত্যে মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার জিতেছেন বানু মুশতাক। এরপর গত সপ্তাহেই কর্ণাটক সরকার ঘোষণা করেছে এই বছর মাইসুরু দশেরা উৎসব উদ্বোধন করবেন তিনি। চামুন্ডি পাহাড়ের মন্দিরে আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব শুরু হয়।
কংগ্রেস সরকারের এই সিদ্ধান্তে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য এবং যদুবীর কৃষ্ণদত্ত ভাদিয়া। তেজস্বী সূর্য বানু মুশতাকের একটি পুরনো ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে অভিযোগ করেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়কে (হিন্দুদের) নিশানা করার উদ্দেশ্যেই একজন মুসলিমকে দিয়ে এই উৎসবের উদ্বোধন করাচ্ছে কংগ্রেস সরকার।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বেঙ্গালুরুর সাংসদ লেখেন, “তথাকথিত অ্যান্টি-কমিউনাল টাস্ক ফোর্স, হেট স্পীচ বিল, রাহুল গান্ধীর জেদের জোরে চাপিয়ে দেওয়া রোহিত ভেমুলা বিল, সন্দেহজনক ধর্মস্থল SIT - এতকিছুর পর এখন কংগ্রেস সরকার শ্রীমতি বানু মুস্তাক, যিনি খোলাখুলিভাবে মা ভুবনেশ্বরী হিসেবে কন্নড় পূজার বিরোধিতা করেছিলেন, কন্নড় পতাকার সাথে সম্পর্কিত হিন্দু সাংস্কৃতিক প্রতীকের বিরোধিতা করেছিলেন - তাঁকে দিয়ে পবিত্র দশেরা চামুণ্ডেশ্বরী পূজার উদ্বোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে - এগুলি বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ নয়।”
তাঁর কথায়, "এগুলি নগর নকশাল এবং মার্কসবাদীদের দ্বারা রচিত একক, সুপরিকল্পিত গেম পরিকল্পনার অংশ, যা সিদ্দারামাইয়া এবং কংগ্রেস রাজ্য সরকারের পূর্ণ উৎসাহে বাস্তবায়িত হয়েছে। আমাদের এই পরিকল্পনাটি খতিয়ে দেখতে হবে এবং আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে এটি প্রতিহত করতে হবে।"
পরে সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে সূর্য বলেন, দশেরা উদ্বোধন করা নিয়ে কারো বিরোধিতা তিনি করেননি। কিন্তু মা চামুণ্ডেশ্বরীকে প্রথম প্রার্থনা যিনি জানাবেন, তাঁকে অবশ্যই দেবীর প্রতি ভক্তি, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা রাখতে হবে।
মাইসুরুরের বিজেপি সাংসদ যদুবীর কৃষ্ণদত্ত ভাদিয়া একটি সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে বলেন, "রাজ্য বিজেপি এবং আমি বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। স্পষ্টতই এটি একটি ধর্মীয় উৎসব এবং আপনি সাধারণত চাইবেন যে একই ধর্মীয় অনুভূতির মানুষ, যারা এই ধর্মীয় রীতিনীতিগুলি মেনে চলেন, একই ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন এবং সেগুলির বোধগম্যতা বোঝেন বা সেগুলিকে সম্মান করেন, সেরকম কেউ এই অনুষ্ঠানের সূচনা করুক।"
সাংসদ জোর দিয়ে বলেন সরকারের জনগণের অনুভূতি বিবেচনা করে দেখা উচিত ছিল। তবে সমাজসংস্কারক হিসেবে বানু মুশতাকের প্রশংসা করেছেন যদুবীর কৃষ্ণদত্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন