Manipur: মণিপুর হিংসায় সম্পূর্ণ নীরব প্রধানমন্ত্রী - শান্তি কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন রতন থিয়াম

৭৫ বছর বয়সী থিয়াম সংবাদমাধ্যমে জানান, "এক মাস ধরে জাতিগত সঙ্কট চলা সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব। ২০০০ বছর ধরে ৩৫টি সম্প্রদায়ের মানুষ সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে একত্রে বসবাস করে আসছে।
নাট্যব্যক্তিত্ব রতন থিয়াম
নাট্যব্যক্তিত্ব রতন থিয়ামফাইল ছবি, সৌজন্যে আইএএনএস ট্যুইটার হ্যান্ডেল

মণিপুর শান্তি কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব রতন থিয়াম (Ratan Thiyam)। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (MHA) পক্ষ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য এই মণিপুর শান্তি কমিটি তৈরি করা হয়েছিল।

১৯৮৭ সালে সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার বিজয়ী রতন থিয়াম জানিয়েছেন, শুধুমাত্র কেন্দ্রের হস্তক্ষেপেই মণিপুর সংকট সমাধান করা সম্ভব।

৭৫ বছর বয়সী থিয়াম সংবাদমাধ্যমে জানান, "এক মাস ধরে জাতিগত সঙ্কট চলা সত্ত্বেও, প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী) এই বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব। দু’হাজার বছর ধরে ৩৫টি সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে একত্রে বসবাস করে আসছে। আমরা খুবই শান্তিপ্রিয় মানুষ।"

তিনি বলেন, মণিপুরে বিদ্যমান জাতিগত সংকট নিরসনে আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন।

ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন (২০১৩ থেকে ২০১৭), রতন থিয়াম এর আগে রাজ্যের ধর্মীয় নেতাদের শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

গভর্নর আনুসুইয়া উইকির নেতৃত্বে গঠিত ৫১-সদস্যের শান্তি কমিটি, রাজ্যের বিবাদমান দল বা গোষ্ঠীগুলির মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য গঠিত হয়েছিল।

গত ৩ মে থেকে বিধ্বংসী জাতিগত হিংসায় মণিপুরে এখনও পর্যন্ত ১২০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩৫০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

মেইতি, কুকি, নাগা, মুসলিম এবং নেপালি সম্প্রদায়ের নেতা ও প্রতিনিধিরা এই শান্তি কমিটির সদস্য। যার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং, রাজ্যের কয়েকজন মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, শিল্পী, সমাজকর্মী এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা আছেন।

যদিও গতকাল শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের প্রচেষ্টার বড় ধাক্কা লেগেছে। গতকালই এক গুরুত্বপূর্ণ মেইতি নাগরিক সমাজ সংগঠন শান্তি কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে এক শীর্ষ কুকি সংগঠন কমিটির একতরফা গঠনে তাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

মণিপুর অখণ্ডতার সমন্বয়কারী কমিটির (COCOMI) আহ্বায়ক জিতেন্দ্র নিংওম্বা জানিয়েছেন, তারা শান্তি কমিটির গঠন নিয়ে "অত্যন্ত অসন্তুষ্ট"। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, "COCOMI এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছে। যেহেতু উপত্যকা অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের অনুভূতি কুকি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে খুব বেশি এবং আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম যে প্রথম জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা উচিত।"

তিনি বলেন, মাদক-সন্ত্রাস এবং অবৈধ অভিবাসনের চাপের সমস্যাগুলি কার্যকরভাবে সমাধান না করা পর্যন্ত মণিপুরে শান্তি অর্জন করা যাবে না, কিন্তু সরকার কিছুই করেনি।

অন্যদিকে, কুকি ইনপি মণিপুর (KIM), এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের সংগঠনের সভাপতিকে কোনো পরামর্শ ও তথ্য ছাড়াই শান্তি কমিটির সদস্য হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল। সংগঠন সরকারের এই একতরফা সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাচ্ছে।

কেআইএম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন মণিপুর সরকার সাম্প্রদায়িক হামলার মদত দিয়ে এবং কুকিদের বিরুদ্ধে মৌলবাদী এবং চরমপন্থী আরামবাই টেঙ্গোল এবং মিতেই লিপুন গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা করে সমস্ত বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।"

কুকি-ভিত্তিক নাগরিক সমাজ সংস্থা আদিবাসী উপজাতি নেতা ফোরাম (ITLF) মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংকে শান্তি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার নিন্দা জানিয়েছে।

গত ৩ মে থেকে মণিপুরে জাতিগত হিংসা চলছে। ওইদিন তফসিলি উপজাতি (ST) মর্যাদার দাবিতে মেইতি সম্প্রদায়ের দাবির প্রতিবাদে পার্বত্য জেলাগুলিতে এক উপজাতি ছাত্র সংগঠন একটি 'উপজাতি সংহতি মার্চ' সংগঠিত করেছিল।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in