Kerala: ইরফান হাবিব 'গুন্ডা' - রাজ্যপালের মন্তব্যে ইতিহাসবিদের জবাব 'যা খুশি বলতে পারেন'

আরিফের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-কে প্রবীণ ইতিহাসবিদ জানিয়েছেন, "স্বাধীন দেশের নাগরিক উনি। যা খুশি বলার স্বাধীনতা আছে ওনার। সেই হিসেবে উনি আমাকে এটা (গুন্ডা) বলেছেন।
ইরফান হাবিব ও আরিফ মহম্মদ খান
ইরফান হাবিব ও আরিফ মহম্মদ খান ফাইল ছবি, গ্রাফিক্স সুমিত্রা নন্দন
Published on

কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পর এবার কেরালার রাজ্যপালের নিশানায় প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব। সাংবাদিকদের সামনে ইরফান হাবিবকে তিনি 'গুন্ডা' বলে অভিহিত করেছেন। যদিও এই বিষয়টিকে একদমই গুরুত্ব দিতে নারাজ প্রফেসর হাবিব। উল্টে তাঁর মন্তব্য, স্বাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে যা খুশি বলতে পারেন উনি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ৮০ তম 'ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেস' বসেছিল কেরলের কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইরফান হাবিব, রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান সহ অন্যান্যরা। সেই সময়ই আরিফ অভিযোগ করেছিলেন, তিনি যাতে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে না পারেন তার জন্য তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন ইরফান হাবিব। মঙ্গলবার দিল্লিতে এই প্রসঙ্গে ফের প্রশ্ন করা হয়েছিল আরিফকে, যার উত্তরে তিনি হাবিবকে গুন্ডা বলে অভিহিত করেছেন।

আরিফ বলেন, "শারীরিকভাবে হেনস্থা করা কি কোনও শিক্ষাবিদের কাজ হতে পারে? এটা তো একজন গুন্ডার কাজ, রাস্তার গুন্ডা। ইরফান হাবিব একজন গুন্ডা। আমি যখন বক্তৃতা দিতে যাচ্ছি, তখন তিনি শারীরিকভাবে আমাকে হেনস্থা করে আমার কন্ঠরোধ করতে চেয়েছিলেন। আপনারা দেখেছেন কিভাবে আমার সহায়ককে হেনস্থা করা হয়েছিল। তাঁর জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছিল। হাবিব সরাসরি আমার দিকে তেড়ে এসেছিলেন।"

আরিফের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-কে প্রবীণ ইতিহাসবিদ জানিয়েছেন, "স্বাধীন দেশের নাগরিক উনি। যা খুশি বলার স্বাধীনতা আছে ওনার। সেই হিসেবে উনি আমাকে এটা (গুন্ডা) বলেছেন। উনি ঠিক বলেছেন না ভুল, তা বিচার করার দায়িত্ব জনগণের। উনি আদালত নন। আমি কোনও রাজ্যপাল বা অন্যান্য কোনও বিতর্কিত বিষয়ে মোটেও আগ্রহী নই।"

ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর গোপীনাথ রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে তাঁকে হেনস্থা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন আরিফ খান। দ্য হিন্দুর তরফ থেকে হাবিবকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০০ জন উপস্থিত ছিলেন। যা ঘটেছে সকলে দেখেছেন। পরের দিন সংবাদপত্রগুলোতে এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ ছিল। উনি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন। উপাচার্য তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। জনগণ বিচার করুক ওঁর বিতর্কিত মন্তব্যের।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেরলে যখন ৮০ তম ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেস বসে তখন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দেশ উত্তাল। বিতর্কিত এই আইনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ খান। ওইদিন অনুষ্ঠানে যখন তিনি বক্তৃতা দিতে শুরু করেন, তখন পেক্ষাগৃহে উপস্থিত সবাই একযোগে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে।

গত ২১ আগস্ট এই প্রসঙ্গ তুলে কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপীনাথ রবীন্দ্রনকে দুষ্কৃতী-অপরাধী বলে অভিহিত করেন তিনি। এরপর ফের এই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় জাতীয় স্তরে। দেশের বহু শিক্ষাবিদ আরিফের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবেই হাবিবের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in