কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী হ্যারি বেলাফন্তে প্রয়াত

বেলাফন্তে যে কেবল সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন তাই নয়। গানের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন। নেমেছেন প্রতিবাদে, প্রতিরোধে, লড়াইয়ে। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের অধিকারের জন্য আজীবন গর্জে উঠেছে তাঁর কন্ঠ।
কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী হ্যারি বেলাফন্তে প্রয়াত
Published on

সঙ্গীত জগতে নক্ষত্রপতন। প্রয়াত কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী হ্যারি বেলাফন্তে। মঙ্গলবার ম্যানহাটনের আপার ওয়েস্ট সাইডে নিজের বাড়িতেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সর্বকালের অন্যতম সফল এই ক্যারিবিয়ান-আমেরিকান গায়কের। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। জামাইকান ফেয়ারওয়েলে’র স্রষ্টার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিশ্ববাসী।

বেলাফন্তে যে কেবল সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন তাই নয়। গানের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন। নেমেছেন প্রতিবাদে, প্রতিরোধে, লড়াইয়ে। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের অধিকারের জন্য আজীবন গর্জে উঠেছে তাঁর কন্ঠ। আমেরিকার সমাজে বর্ণবৈষম্যের নাগপাশ ছিন্ন করতে নিজের গানকেই করেছেন হাতিয়ার।

১৯২৭ সালের ১ মার্চ ম্যানহাটনে এক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অভিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন হ্যারল্ড জর্জ বেলাফন্তে জুনিয়র ওরফে হ্যারি বেলাফন্তে। জামাইকান মেন্টো লোকগানের সঙ্গে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ক্যালিপসোর স্টাইলের মিশ্রণ ঘটিয়ে ছিলেন তিনি। সঙ্গীত জগতে এনেছিলেন বিপ্লব। পল রবসন এবং মার্টিন লুথার কিং-এর ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা বেলাফন্তে উপহার দিয়েছেন 'ডে-ও', 'জাম্প ইন দ্য লাইন', 'জামাইকান ফেয়ারওয়েল' সহ একাধিক কালজয়ী অ্যালবাম। এছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন 'কারমেন জোনস' (১৯৫৪), 'আইল্যান্ড ইন দ্য সান' (১৯৫৭), এবং 'ওডস এগেইনস্ট টুমরো' (১৯৫৯) সহ বেশ কয়েকটি ছবিতে।

১৯৫৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল বেলাফন্তের অ্যালবাম ক্যালিপসো। টানা ৩১ সপ্তাহ ধরে বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষস্থানে জ্বলজ্বল করছিল এই অ্যালবাম। এটিই ছিল কোনো একক শিল্পীর প্রথম অ্যালবাম, যার ১০ লক্ষ কপি বিক্রি হয়।

দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে তাঁর গান আলোড়ন তুলেছিল ইউরোপ থেকে আফ্রিকায়। তৎকালীন ভারতবর্ষও মেতেছিল তাঁর 'জাম্প ইন দ্য লাইন', 'দ্য ব্যানানা বোট সং' 'আইল্যান্ড ইন দ্য সানে'র মতো গান গুলিতে। নিজের গানের মাধ্যমে আমেরিকায় বর্ণবৈষম্য মুছে দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন বেলাফন্তে। ঝাঁপিয়েছিলেন সমাজসেবায়। দারিদ্র, বর্ণবাদ এবং এইডসের ছোবলে বিপন্ন আফ্রিকাতেও গিয়েছেন বারবার সমাজকর্মী হিসেবে। বেলাফন্তের মৃত্যুতে তাই শোকস্তব্ধ বিশ্বের সংস্কৃতি জগত। শোকস্তব্ধ বিশ্ববাসী।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in