সুকান্ত ভট্টাচার্য
সুকান্ত ভট্টাচার্যফাইল ছবি সংগৃহীত

'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়'

Published on

১৯২৬ থেকে ১৯৪৭। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি বাংলা সাহিত্যকে দিয়ে গেছেন এক অসাধারণ রত্নভান্ডার। লিখে গেছেন সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রাম, যন্ত্রণা ও বিক্ষোভের কথা তুলে ধরেছেন অসাধারণ সব কবিতায়। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের মুক্তি ও নতুন সমাজ গড়ার জন্য লড়াই করে গেছেন। বামপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যর আজ ৯৪ তম জন্মদিন। ১৯২৬ সালের ১৬ ই আগস্ট কলকাতায় তাঁর জন্ম।

বাংলা সাহিত্যে গণমুখী কবিতা রচনায় সুকান্তের দান অবিস্মরণীয়। মার্কসীয় দর্শন ও লেনিনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি লিখেছেন

"লেনিন ভূমিষ্ঠ রক্তে, ক্লীবতার কাছে নেই ঋণ,
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন"।

সেসময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবী জুড়ে জ্বলছে অশান্তির আগুন। পরাধীন ভারতবর্ষেও ছড়িয়ে পড়েছিল সেই দাবানল। যুদ্ধ-দুর্ভিক্ষর হানাদারিতে পৃথিবী তথা ভারতবর্ষের রূপ ক্ষতবিক্ষত। যা ক্ষতবিক্ষত করেছিল কবি হৃদয়কেও। ব্যাথিত চিত্তে তিনি লিখেছিলেন... "অবাক পৃথিবী অবাক করলে তুমি, জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি"।

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের রচনাবলীর মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হলো ছাড়পত্র, পূর্বাচল, মিঠেকড়া, অভিযান, ঘুম নেই, হরতাল, গীতিগুচ্ছ প্রভৃতি। তাঁর কবিতায় দেশপ্রেম এবং গণমুখী চেতনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁর কবিতা সহজ ভাষায় সামন্তবাদকে, সাম্রাজ্যবাদকে তীব্রভাবে আঘাত করেছে এবং ভিতরকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। বাস্তব জীবনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি - "ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি"।

গুরুতর অসুস্থ কবিকে কলকাতার যাদবপুরের টিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে ১১৯ লাউডন স্ট্রীটের রেড এ্যান্ড কিওর হোমে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। যক্ষারোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in