জীবনে বেশ কয়েকজন স্বৈরাচারী শাসকের উত্থান-পতন দেখেছি - রুশদি

আমেরিকাকে সাবধান করলেন সালমন রুশদি
সালমন রুশদি
সালমন রুশদিফাইল ছবি সংগৃহীত

"আমি আমার জীবনে বেশ কয়েকজন স্বৈরাচারী শাসকের উত্থান-পতন দেখেছি।... আজ আমি বলছি, সাবধান, আমেরিকা। এখানে এরকম ঘটবে না, এরকম কথা ভুলেও ভাবেন না।" জর্জ ফ্লয়েড হত‍্যাকান্ডে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে কলম ধরে এভাবেই গর্জে উঠলেন বিখ্যাত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি। গত ৩ জুন ওয়াশিংটন পোষ্টে তাঁর এই নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি তাঁর লেখনীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকজন শাসকের পতনের কারণ উল্লেখ করেছেন। সেই তালিকায় ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, পাকিস্তানের জুলফিকার আলী ভুট্টোর নাম রয়েছে। রুশদির মতে, ১৯৭৫ সালে গোটা ভারতে "জরুরি অবস্থা" আরোপ করে স্বৈরাচারী শাসক মনোভাবের পরিচয় দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। সেই কারণেই তাঁর পতন হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থান করেছিলেন জেনারেল মহম্মদ জিয়া-উল হক।

লেখকের মতে, চরম আত্মমুগ্ধতা, বাস্তববিমুখ, অনুচরদের প্রতি প্রবল অনুরাগ, সত‍্যবাদী ও সাংবাদিকদের ঘৃণা, অনিয়ন্ত্রিত মেজাজ ইত‍্যাদি একজন স্বৈরাচারী শাসকের বৈশিষ্ট্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য বর্তমান।

তিনি লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী আইনে বলা হয়েছিল, "বাকস্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার সম্পূর্ণ জায়গা থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করা এবং কোনো অভিযোগের প্রতিকারের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করার অধিকার থাকবে জনগণের।" কিন্তু ট্রাম্প এই আইনে পরিবর্তন আনেন। তাই হোয়াইট হাউসের সামনে হওয়া শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট দিয়ে আক্রমণ চালায় তাঁর সুরক্ষা বাহিনী এবং এর কিছুক্ষনের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের গায়ে সন্ত্রাসবাদীর তকমা সেঁটে দেন তিনি। ক‍্যামেরার সামনে আন্দোলনের বেশ কিছু ছবি দিয়ে তিনি অনায়াসেই তাঁর এই দাবি প্রমাণ করতে পারবেন, এ কাজে তিনি সিদ্ধহস্ত।

তিনি আরও লেখেন, "রাষ্ট্রপতির প্রতিদিনের আচরণে আমরা এতোটাই ক্ষুব্ধ, ওনার মিথ‍্যাচর, অক্ষমতা, বোকামির প্রতি আমরা এতোটাই অভ‍্যস্ত যে এই ঘটনাকে 'ট্রাম্পিস্তানের' অন‍্যান‍্য দিনের থেকে আলাদা ভাবতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু এবারে অন‍্য কিছু হচ্ছে। জর্জ ফ্লয়েড হত্যার মধ্য দিয়ে যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল তা ক্রমশ বাড়ছে। হোয়াইট হাউসের লোকটি ভয় পেয়েছে, এমনকি একটা সময় হোয়াইট হাউসের সমস্ত আলো নিভিয়ে মাটির নীচে আশ্রয় নিতে হয়েছিল তাঁকে। এরকম একজন লোক ওই সময়ে আর কিই বা করতে পারে?"

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in