

মহারাষ্ট্রের পাওয়ার পরিবারের ক্ষমতার লড়াই এবার অন্দরমহল ছেড়ে বাইরে। সম্প্রতি নিজের প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পারটি-র (এনসিপি) নাম, প্রতীক সবই হারিয়েছেন শারদ পাওয়ার। নিজেরই পরিবারের সদস্য অজিত পাওয়ারের কাছে দল যুদ্ধে পরাজিত হয়েছেন তিনি। এবার বিবাদ দানা বাঁধতে চলেছে বারামতী লোকসভা আসন নিয়ে। শারদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবার শারদ পাওয়ার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এনসিপি নাম প্রতীক হারালেও তিনি চিন্তিত নন। তিনি দলকে ঢেলে সাজাবেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, সাধারণ মানুষ কখনই দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা কোনও ব্যক্তিকে মান্যতা দেবেনা। অজিত পাওয়ারকে তীব্র আক্রমণ করে বর্ষীয়ান শারদ পাওয়ার বলেন, ক্ষমতা আসে, যায়। কিন্তু আদর্শ, নীতি এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা চিরস্থায়ী।
সূত্র অনুসারে বারামতী আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা এনসিপি শারদ পাওয়ার গোষ্ঠীর সুপ্রিয়া সুলের। যদিও শোনা যাচ্ছে এই কেন্দ্র থেকে এনসিপি অজিত গোষ্ঠীর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রা পাওয়ার।
রাজনৈতিক মহলে এই গুঞ্জন শুরু হয়েছে অজিত পাওয়ারের সাম্প্রতিক আবেদনের পর। যেখানে তিনি বারামতীর ভোটারদের উদ্দেশ্যে এক আবেদন জানিয়ে বলেছেন – অভিজ্ঞদের সমর্থন নিয়ে প্রথম নির্বাচনে লড়ছেন এরকম কাউকে বারামতীর সাধারণ মানুষ ভোট দিক। তিনি আরও জানান, যদি তাঁর প্রার্থী সুপ্রিয়া সুলেকে পরাজিত করতে পারে সেক্ষেত্রে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বারামতী কেন্দ্র থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এনসিপি ভেঙে আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করা এবং মহারাষ্ট্রের বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়া অজিত পাওয়ারের এই ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক মহলের অনুমান – বারামতী কেন্দ্র থেকে তিনি তাঁর স্ত্রী সুনেত্রা পাওয়ারকে মনোনয়ন দেবেন।
বারামতী বিধানসভা কেন্দ্রকে শারদ পাওয়ারের গড় হিসেবে ধরা হয়। দীর্ঘদিন থেকে তিনি একভাবে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। ১৯৬৭, ১৯৭২, ১৯৭৮, ১৯৮০, ১৯৮৫ এবং ১৯৯০-এর বিধানসভা নির্বাচনে তিনি এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। পাশাপাশি ১৯৮৪, ১৯৯৬, ১৯৯৮ এবং ২০০৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও তিনি এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন।
বারামতী কেন্দ্রের অন্তর্গত মোট বিধানসভা আসন সংখ্যা ৬টি। যার মধ্যে আছে দাউন্দ, ইন্দপুর, বারামতী, পুরন্দর, ভর এবং খাদাকয়াশালা। এই ছটি কেন্দ্রের মধ্যে দাউন্দ এবং খাদাকয়াশালায় বিজেপি, পুরন্দর এবং ভর কেন্দ্রে কংগ্রেস, ইন্দপুর ও বারামতী কেন্দ্রে এনসিপির বিধায়ক।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ৫২.৬৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে। তিনি জয়লাভ করেন ১,৫৫,৭৭৪ ভোটে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কাঞ্চন রাহুল কুল পেয়েছিলেন ৪০.৬৯ শতাংশ ভোট।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন