হিমাচল প্রদেশে বিজেপি গোষ্ঠী কোঁদল আবারও প্রকাশ্যে। দলের আইটি সেল প্রধান চেতন ব্রাগতার সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের বিবাদের জেরে রাজ্যে আসন্ন উপনির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেছেন দলের দীর্ঘদিনের কর্মী চেতন। যে ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে।
হিমাচল প্রদেশের জুব্বাল কাথাকি বিধানসভা আসনে আগামী ৩০ অক্টোবর উপনির্বাচন। রাজ্য বিজেপি আইটি সেল প্রধান চেতন ব্রাগতার বাবা, প্রাক্তন মন্ত্রী নরেন্দ্র ব্রাগতার মৃত্যুতে এই আসন শূন্য হয়। এই আসনে বিজেপি মনোনয়ন দিয়েছে নীলম সারায়েক-কে।
এই প্রসঙ্গে আইএএনএস-কে এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে চেতন জানান, দলের উচিৎ ‘স্বজনপোষণ’ এবং ‘পরিবারবাদ’ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া। দলীয় নেতৃত্বর এই বিষয়ে জানানো উচিৎ যে কোনটা স্বজনপোষণ এবং কোনটা নয়। কেউ ২০০১ সাল থেকে দলের হয়ে কাজ করবেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব সামলাবেন এবং সেটাকে স্বজনপোষণ বলা হবে কীভাবে? যদি তাই হয় তাহলে নেতৃত্বের আরও আগে বিষয়টা জানানো উচিৎ।
প্রসঙ্গত, চেতন ব্রাগতা ২০০১ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১০ সালে তিনি ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার জাতীয় সোশ্যাল মিডিয়া প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৮ পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন। এরপর তাঁকে হিমাচল প্রদেশের আইটি সেল-এর প্রধান করা হয় এবং বর্তমানে তিনি সেই পদেই আছেন।
রাজ্য বিজেপি আইটি সেলের প্রধান ব্রাগতা জানিয়েছেন, যদি দল তাঁকে মনোনয়ন দেবে না বলেই ভেবেছিলো তাহলে কেন তাঁকে প্রচার শুরু করতে বলেছিল? এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুর ১৫ দিনের মধ্যে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে প্রচার শুরু করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুর এবং তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্যরা বারবার জুব্বাল কাথাকি কেন্দ্রের ভোটারদের বলেছেন আমি ওই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। যদি আমাকে মনোনয়ন দেবার ইচ্ছে তাঁদের ছিলোনা তাহলে কেন তাঁরা এই ধরণের কথা বলেছিলেন? আমাকে কেন প্রচার শুরু করতে বলেছিলেন? কেন বারবার জুব্বাল কাথাকির মানুষজনকে মিথ্যা বলেছিলেন?
তিনি আরও জানান বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে মনোনয়ন না দেওয়ায় এলাকার মানুষ বিস্মিত এবং তাঁদের ভালোবাসা, চাপের কাছে নতিস্বীকার করে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ব্রাগতা বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন না দেবার পর কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ আমার বাড়িতে আসেন এবং আমাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জোর করেন। মহিলারা কাঁদছিলেন এবং দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। তাঁদের ভালোবাসায় আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এই ঘটনার পরেই বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ব্রাগতাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হয়। এই প্রসঙ্গে ব্রাগতা জানিয়েছেন, একথা সত্যি যে বিজেপি আমাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলেছে। কিন্তু আমি কোনো অবস্থাতেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করবো না। আমি আমার মানুষদের জন্য নির্বাচনে লড়াই করবো।
হিমাচল প্রদেশ বিজেপির সূত্র অনুসারে, চেতন ব্রাগতা যে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন এই বিষয়টি নেতৃত্বের ভাবনাতেই ছিলো না এবং তিনি মনোনয়ন জমা দেবার পরেও বহু নেতাই সেই বিষয়ে অবগত ছিলেন না।
- with Agency Inputs
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।