
করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান ধরলে সবার প্রথমেই উঠে আসে দুটি জেলার নাম- উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা। এই দুই জেলায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার দু'টোই বেশি দেখা গিয়েছে। করোনার প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রেও একই পরিসংখ্যান দেখা গিয়েছে। তবে পাশাপাশি আরও একটি পরিসংখ্যান উঠে এসেছে, যাতে আশঙ্কা ছড়িয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য মহলে। অনেক বেশি দ্রুত হারে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ। আর সেই গ্রামাঞ্চলেই টিকার হার কম শহরাঞ্চলের তুলনায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া এর অন্যতম কারণ। গ্রামাঞ্চলের মানুষ ইন্টারনেট, স্মার্টফোন ব্যবহারের ততটা স্বচ্ছন্দ নয় যতটা শহরের মানুষ স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। স্মার্টফোন ব্যবহার করলেও ইন্টারনেট ব্যবহারে অনেকেই সড়গর নন। অন্যদিকে, অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ইংরেজিতে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভাষার একটা সমস্যা অনেকে ক্ষেত্রেই বিরূপ ভাবনা তৈরি করছে। এর পাশাপাশি রয়েছে সচেতনতার অভাব, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির গা-ছাড়া মনোভাবও।
করোনা সংক্রমণের প্রথম ১৩ দিনে (যে সময়ে মূলত স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নিয়েছেন) শহুরে জেলাগুলিতেই বেশিরভাগ মানুষ টিকা নিয়েছেন। তখন শহরাঞ্চলে টিকাকরণ হয় ০.২৫ শতাংশ। অন্যদিকে, গ্রামাঞ্চলে টিকাকরণের হার ছিল ০.১৮ শতাংশ। শহুরে এলাকা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শুরুতেই ১.৩৯ গুণ বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। গত ১ থেকে ১৩ মে-র মধ্যে গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহুরে জেলাগুলিতে ১.৬৫% বেশি মানুষ করোনা টিকা নেন। এই শতাংশের হারই ভাবাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলকে।
ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭৩ শতাংশই গ্রামে থাকে। চলতি মার্চে মোট করোনা সংক্রমণের ৩৪.৩ শতাংশ ছিল গ্রামে। ৪৮.২ শতাংশ সংক্রমণ শহরে। বাকি সংক্রমণ ঘটেছে মফঃস্বল এলাকায়। গত মাসে দেশে মোট করোনা সংক্রমণের ৪৪.১ শতাংশ হয়েছে গ্রামে আর শহরে ৪০.৮ শতাংশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন