জ্বর, বমি, পেট খারাপ-এই তিন উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যজুড়ে উদ্বেগ ছড়াল। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সেখানে ভর্তি হয়েছে প্রায় ১৩০ জন শিশু। এদিকে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা, অন্যদিকে জ্বর এবং ডায়ারিয়ায় একের পর এক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আর এই ঘটনা কার্যত বেআব্রু করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে।
তবে শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, কলকাতাতেই উপসর্গ নিয়ে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। কলকাতা মেডিক্যালে ছয় শিশু আইসিইউতে ভর্তি আছে। নির্দিষ্টভাবে এই সংক্রমনের কারণ, উপসর্গ চিহ্নিত করা যায়নি। উপসর্গ চিহ্নিত করতে না পারায় মঙ্গলবার সকালে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই তিন উপসর্গ নিয়ে শিশু ভর্তি সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। একই দিনে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ এক শিশুর মৃত্যু হয়। সরকারি নথি অনুযায়ী, ৫০০-র বেশি শিশু অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমনটাই বরাবর বলে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা। তার জন্যস্বাস্থ্য ভবন ঘোষণা করেছিল যে গোটা রাজ্যে প্রস্তুতি চলছে। বাড়ানো হচ্ছে বেড। আইসিইউ, পিকু, নিকু-সহ পেডিয়াট্রিক এক্সপার্টদের নিয়ে তৈরি হয়েছে টিম। তৃতীয় ঢেউ না এলেও অজানা উপসর্গ নিয়ে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জেরে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং কোচবিহার সংলগ্ন এলাকায় বেআব্রু হয়ে পড়েছে সরকারি ব্যবস্থাই। একাধিক জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল কিংবা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গাদাগাদি করে রয়েছে শিশু এবং তাদের অভিভাবকেরা। ভর্তির জায়গা নেই।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২-১৪ দিন ধরে এই অজানা জ্বরের প্রকোপ বেড়ে চলেছে জেলাজুড়ে। উত্তরবঙ্গের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, সঠিকভাবে সেই তথ্য জানানো হয়নি স্বাস্থ্য ভবনকে। তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এত সংখ্যক শিশু অসুস্থ, অথচ ১০-১২ দিন পর পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ জানা গেল না।
এই জ্বর যে জাপানি এনসেফালাইটিস নয়, তা নিশ্চিত করেছেন উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওএসডি অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুশান্ত রায়। মঙ্গলবার অবশ্য আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ কমিটি। অন্যদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, এই ইস্যুতে বুধবার মুখ্য সচিব সব জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।