সরকারি ‘ফেয়ার প্রাইস শপে’ নিম্নমানের ওষুধ! খোদ স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল দপ্তরের রিপোর্ট

সরকারি হাসপাতালে ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকারি সংস্থাই। সরকার কীভাবে মানুষকে নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করতে পারল? সরকারি সংস্থার রিপোর্টে হতবাক চিকিৎসকরা।
ছবি- প্রতীকী
ছবি- প্রতীকী
Published on

ফেয়ার প্রাইস শপ ন্যায্যমূল্যের ষুধের দোকান, সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে ওষুধ কিনেছেন? সেসব ওষুধের গুণমান ঠিক আছে তো? অনেক ক্ষেত্রেই ওষুধের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে অর্থাৎ নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। বিভিন্ন ফেয়ার প্রাইস শপ, হাসপাতালে পরীক্ষা করে স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরি জানিয়েছে, বেশিরভাগ ওষুধের কার্যকারিতা নেই।

সরকারি হাসপাতালে ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকারি সংস্থাই। সরকার কীভাবে মানুষকে নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করতে পারল? সরকারি সংস্থার রিপোর্টে হতবাক চিকিৎসকরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নামও ঢুকে গিয়েছে এই তালিকায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ডিরেক্টরেট অফ হেলথ সার্ভিসেস, সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর সংশ্লিষ্ট জেলা ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোলেস্টেরলের ওষুধ এ্যাটোরভাস্টাটিন ৪০ এমজি গুণমান ঠিক নেই বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কার্শিয়াং এইচডি হাসপাতালে ফেয়ার প্রাইস শপ থেকে কেনা ওই ওষুধ কার্যকারিতাহীন বলে জানানো হয়েছিল। ডিআরএস বর্ধমান, ডিআরএস পশ্চিম মেদিনীপুরে মিলেছে বিটামেথসল মলম ১%। চিকিৎসকদের প্রশ্ন, যেসব ওষুধ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে, তার গুণমান বিচার কি করে হবে।

ড্রাগ কন্ট্রোল অপারেটরের তালিকা অনুযায়ী, কালিম্পং ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতাল এবং পূর্ব বর্ধমানের মেমারি রুরাল হাসপাতালের ফেয়ার প্রাইস শপ থেকে কেনা এ্যাটোরভাস্টাটিন ১০ এমজি-র গুণমান ঠিক নেই। ডিআরএস ডায়মন্ডহারবার, চিত্তরঞ্জন সেবা সদন, ডিআরএস আসানসোল, গ্যারেজ বাঁকুড়া থেকে সরবরাহ করা বেশ কিছু ওষুধ ও ইনজেকশন-এর গুণগত মান ঠিক নেই।

এসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস সাধারণ সম্পাদক ডক্টর মানস গুমটা বলেন, বারবার সরকারকে বলে ওষুধের গুণমান পরীক্ষা করানো যায়নি। কোনও এক অজানা রহস্যজনক কারণে সরকার বারবার পিছিয়ে গেছে। ড্রাগ কন্ট্রোলের উদ্যোগেও সরকার কান দেয়নি। এবার খদ্দের সেজে তারা ওষুধের গুনাগুন খতিয়ে দেখেন। ডক্টর গুমটার অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিত্সকদের জেনেরিক নামের ওষুধ লিখতে বলা হয়েছে। কিন্তু ফেয়ার প্রাইস অফ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু ব্র্যান্ডের জেনেরিক ঔষধ। নামেই জেনেরিক, কিন্তু এই ওষুধগুলো ব্র্যান্ডেড। বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। একই ওষুধ হয়তো বাজারে আরও কম মূল্যে অন্য নামে পাওয়া যায়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফুয়াদ হালিম বলেন, ঔষধগুলো সরবরাহ করার আগে কেন গুণমান যাচাই করা হল না। এখন দাবি উঠেছে, শুধু কয়েকটি জেলা নয়, গোটা রাজ্যে ওষুধের গুনমান খতিয়ে দেখা হোক।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in