Pune: মহারাষ্ট্রে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিরল গুইলেন-বারি সিন্ড্রোম! মৃত ১, আক্রান্ত ১০১

People's Reporter: গুইলেন-বারি সিন্ড্রোম একটি বিরল ‘অটোইমিউন ডিসঅর্ডার’। এই রোগে নিজের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেরই স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। ফলে শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি - সংগৃহীত
Published on

মহারাষ্ট্রে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিরল স্নায়ুরোগ গুইলেন-বারি সিন্ড্রোম (জিবিএস)। ইতিমধ্যেই পুণেতে এই রোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মিলেছে। সরকারি তথ্য বলছে, পুণেতে এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১০১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ২৮ জন আক্রান্ত হয়েছে গুইলেন-বারি সিন্ড্রোমে। গোটা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও পুণে পুরসভা।

সরকারি সূত্র অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তি (৪০) বেশ কয়েকদিন ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৮ জানুয়ারি তাঁকে সোলাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথমে রাখা হয়েছিল আইসিইউতে। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাঁকে জেনারেল বেডে দেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ওই ব্যক্তি জিবিএস আক্রান্ত। পরে পুণের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও জানাচ্ছে, ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিকভাবে জিপিএস-র জন্যই মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মস্তিষ্ক, রক্ত এবং অন্ত্রের টিস্যু সহ ভিসেরার নমুনাগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মৃত্যুর আরও বিস্তারিত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সরকারি তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় ২৮ টি নতুন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। বর্তমানে জিপিএস রোগে আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে ১০১ জন। তথ্য বলছে, রোগীদের মধ্যে বর্তমানে ১৬ জন ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছে। আক্রান্তদের দেহে ট্রিগার ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১৯ জনের বয়স ৯ বছরের নীচে।

গুইলেন-বারি সিন্ড্রোম একটি বিরল ‘অটোইমিউন ডিসঅর্ডার’। এই রোগে নিজের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেরই স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। ফলে শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে কিছু দিনের মধ্যেই। পুণে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুইলেন-বারি সিন্ড্রোমে আক্রান্তদের ডায়রিয়া, পেটব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। পুণেতে যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের অনেকেরই ভয়ঙ্কর শ্বাসের সমস্যাও দেখা গিয়েছে। অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। তাই এই সমস্ত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া পুর কর্তৃপক্ষের তরফে আরও জানানো হয়েছে, দূষিত খাবার এবং জলের কারণে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবন রয়েছে। তাই ফোটানো জল খেতে বলা হয়েছে ও রাস্তার ধারের খোলা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই রোগে আক্রান্ত ৮০ শতাংশ রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার ছ’মাসের মধ্যে হাঁটার ক্ষমতা ফিরে পান। তবে ব্যতিক্রম হিসাবে কিছু রোগীর সুস্থ হতে এক বছর বা তার বেশী সময় লাগতে পারে। তবে এই রোগের খরচ অনেকটাই বেশী। আক্রান্তদের ইমিউনোগ্লোবুলিন (আইভিআইজি) ইনজেকশনের প্রয়োজন হয়, যার প্রতিটির খরচ প্রায় ২০,০০০ টাকা।

মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার জানান, পুণে পুরসভার কমলা নেহরু হাসপাতালে জিবিএস রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হবে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in