
দৈনিক করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে মৃত্যুর সংখ্যা - দুইই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশে। প্রতিদিনই ভাঙছে দৈনিক সংক্রমণের রেকর্ড, যা বাড়তে বাড়তে এখন এসে দাঁড়িয়েছে ২.৩৪ লাখে। এই নিয়ে টানা তিনদিন দেশে দৈনিক সংক্রমণ দুই লাখের উপরে রয়েছে। সবমিলিয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে গোটা দেশে।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৯২ জন, করোনাকালে এটাই সর্বাধিক সংক্রমণ। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ২.১৭ লক্ষ। আজকের পরিসংখ্যান নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৬ হাজার ৬০৯। ২৪ ঘন্টায় দেশে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৪১ জন, গতকাল যা ছিল ১ হাজার ১৮৫। এই নিয়ে টানা চারদিন কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের বেশি রয়েছে। এইভাবে চলতে থাকলে জুনেই দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত দেশে কোভিডে মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৪৯ জনের। ২৪ ঘন্টায় সক্রিয় কেস প্রায় ১.১০ লক্ষ বেড়ে দেশে মোট সক্রিয় কেসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৪০।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে মহারাষ্ট্রে, যা সামলাতে আপতত হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন। একদিনে সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৭২৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৯৮ জনের। রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৩৭ লক্ষ ৩ হাজার ৫৮৫। করোনার কারণে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৯ হাজার ৫৫১ জনের।
মহারাষ্ট্রের পরেই সবথেকে খারাপ অবস্থা দিল্লির। শহরের মধ্যে সবথেকে বেশি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে মুম্বাইকেও ছাড়িয়ে গেছে দিল্লি। শেষ ২৪ ঘন্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৮৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে হাসপাতালে আর বেড পাওয়া যাচ্ছে না। একটা বেডে দু'জন করে রোগী রাখতে হচ্ছে। অস্থায়ী শ্মশানের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
মহারাষ্ট্র-দিল্লি ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট - এই সাতটি রাজ্যের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। উত্তরপ্রদেশে ২৪ ঘন্টায় দৈনিক সংক্রমণ ২৭,৩৬০। ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরল, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশে এই সংখ্যাটা যথাক্রমে ১৪,৯১২, ১৪,৮৫৯, ৮,৪৪৯, ১০,০৩১, ৮,৯২০, ১১,০৪৫।
আজ বেলা সাড়ে এগারোটায় ১১টি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে জরুরি বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষবর্ধন। গোটা দেশের চিন্তার কারণ হয়ে ওঠা কুম্ভ মেলাকেও "প্রতীকী" করে দেওয়ার আচার্য্য মহামন্ডলেশ্বর স্বামী অবধেশনন্দ গিরির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন