
কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্তও দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছিল। কিন্তু আচমকাই সমস্ত ছবিটা পাল্টে যাচ্ছে। হু-হু করে বাড়ছে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। একদিনে দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪৭ হাজার, গতকাল যা ছিল ৪৪ হাজার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৯৫১, গত ৭ নভেম্বরের পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। আজকের পরিসংখ্যান নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮১।
করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ২৪ ঘন্টায় দেশে মারা গেছেন ২১২ জন, গতকাল যা ছিল ১৯৭। গত ৯ জানুয়ারির পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যুসংখ্যা, ওইদিন ২২৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯৬৭ জনের। ২৪ ঘন্টায় সক্রিয় কেস প্রায় ২৫,৫৫৯ বেড়ে দেশে মোট সক্রিয় কেসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৪৬ তে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে মহারাষ্ট্রে, যা সামলাতে আপতত হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন। ২৪ ঘন্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৫, রাজ্যে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। গতকাল ছিল ২৭ হাজার ১২৬। ২৪ ঘন্টায় কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৯ জনের। রাজ্যে মোট আক্রান্ত ২৪ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৮২, এর মধ্যে সক্রিয় কেসের সংখ্যা ২ লক্ষ ১১ হাজার ৪১৬। করোনার কারণে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৩ হাজার ৩৯৯ জনের। মহারাষ্ট্রের পালঘরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ। নান্দেদে ১১ দিনের জন্য কার্ফু ঘোষণা করা হয়েছে। নাগপুরে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিসে ২৫ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট সন্ধ্যা ৭টার পর বন্ধ থাকার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহন্মুম্বই প্রশাসনের তরফে মুম্বাইয়ের সমস্ত শপিং মলে করোনার র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুম্বাইয়ে ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৭৭৫ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।
মহারাষ্ট্র ছাড়াও পাঞ্জাব, কর্ণাটক গুজরাট, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এরই মাঝে আশার আলো দেখাচ্ছে কেরল। দৈনিক সংক্রমণ ও সক্রিয় রোগীর সংখ্যার গ্রাফ ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হচ্ছে সেখানে।
মধ্যপ্রদেশে ভোপাল, ইন্দোর এবং জবলপুরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তিন শহরের সমস্ত স্কুল ও কলেজও বন্ধ থাকবে। পাঞ্জাবেও ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। সিনেমা হল এবং মলেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। তামিলনাড়ুতে নবম থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলবে। রাজস্থানের আটটি শহরে আজ রাত থেকে নাইট কার্ফু জারি করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন