
টানা ৬ দিন দৈনিক সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গতকাল কিছুটা কমে ছিল। আজ ফের একলাফে তা বেড়ে প্রায় তিন লাখের কাছে পৌঁছে গেল। মৃত্যুর সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেল ২ হাজার। সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি রেকর্ড মৃত্যুও হয়েছে শেষ ২৪ ঘন্টায়। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এতো বেশি যে অধিকাংশ হাসপাতালেই চূড়ান্তভাবে অক্সিজেন, বেডের অভাব দেখা গেছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৪১ জন, করোনাকালে এটাই সর্বাধিক সংক্রমণ। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ২.৫৯ লক্ষ। আজকের পরিসংখ্যান নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লক্ষ ১৬ হাজার ১৩০। ২৪ ঘন্টায় দেশে মারা গেছেন ২ হাজার ২৩ জন, এই প্রথম একদিনে দেশে এতজনের মৃত্যু হলো কোভিড সংক্রমণে। গতকাল ১ হাজার ৭৬১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত দেশে কোভিডে মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৫৩ জনের। ২৪ ঘন্টায় সক্রিয় কেস প্রায় ১.২৫ লক্ষ বেড়ে দেশে মোট সক্রিয় কেসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫৩৮। ২৪ ঘন্টায় সংক্রমণ মুক্ত হয়েছেন ১.৬৭ লক্ষ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে মহারাষ্ট্রে, যা সামলাতে আপতত হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন। একদিনে সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ৯৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫১৯ জনের। রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৩৯ লক্ষ ৬০ হাজার ৩৫৯, যার মধ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬.৮৫ লক্ষ, গোটা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। করোনার কারণে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬১ হাজার ৩৪৩ জনের।
মহারাষ্ট্রের পরেই সবথেকে খারাপ অবস্থা উত্তরপ্রদেশের। ২৪ ঘন্টায় সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ হাজার ৭৯৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ১৬২ জনের। এখানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২.২৩ লক্ষ।
এরপরই রয়েছে দিল্লি। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত শহরের তালিকায় মুম্বাইকেও ছাড়িয়ে গেছে দিল্লি। শেষ ২৪ ঘন্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৩৯৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭৭ জনের। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে হাসপাতালে আর বেড পাওয়া যাচ্ছে না এবং অধিকাংশ হাসপাতালেই অক্সিজেনের অভাব দেখা গেছে। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে শহরের কয়েকটি বড় হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করেছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহের লকডাউন জারি করেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার, যা শেষ হবে আগামী সোমবার।
এই তিনটি রাজ্য ছাড়াও কর্ণাটক, কেরল, ছত্তিশগড়, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান - এই সাতটি রাজ্যের পরিস্থিতিও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই সাতটি রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ২১,৭৯৪, ১৯,৫৭৭, ১৫,৬২৫, ১০,৯৮৬, ১২,৭২৭, ১২,২০৬, ১২,২০১।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন