
গতকালই আড়াইলাখ ছাড়িয়ে গেছিলো দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও বেড়ে সংক্রমণ পৌঁছে গেল ২.৭৩ লাখে। করোনাকালে এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। একদিনে মৃত্যুও হলো দেড় হাজারের বেশি মানুষের। এই নিয়ে টানা ছ’দিন কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের গন্ডির ওপরে রয়েছে। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এত বেশি যে অধিকাংশ হাসপাতালেই অক্সিজেন, বেডের অভাব দেখা গেছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৮১০ জন, করোনাকালে এটাই সর্বাধিক সংক্রমণ। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ২.৬১ লক্ষ। আজকের পরিসংখ্যান নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫০ লক্ষ ৬১ হাজার ৯১৯। ২৪ ঘন্টায় দেশে মারা গেছেন ১ হাজার ৬১৯ জন, গতকাল যা ছিল ১ হাজার ৫০১। এই নিয়ে টানা ছ’দিন কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের বেশি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেশে কোভিডে মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৬৯ জনের। ২৪ ঘন্টায় সক্রিয় কেস প্রায় ১.২৮ লক্ষ বেড়ে দেশে মোট সক্রিয় কেসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লক্ষ ২৯ হাজার ৩২৯।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে মহারাষ্ট্রে, যা সামলাতে আপতত হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন। একদিনে সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৬৩১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫০৩ জনের। রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৩৮ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩৩৮, যার মধ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬.৭২ লক্ষ, গোটা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। করোনার কারণে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজার ৪৭৩ জনের।
মহারাষ্ট্রের পরেই সবথেকে খারাপ অবস্থা উত্তরপ্রদেশের। ২৪ ঘন্টায় সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৬৬ এবং মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জনের। এখানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১.৯১ লক্ষ।
এরপরই রয়েছে দিল্লি। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত শহরের তালিকায় মুম্বাইকেও ছাড়িয়ে গেছে দিল্লি। শেষ ২৪ ঘন্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪৬২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৬১ জনের। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে হাসপাতালে আর বেড পাওয়া যাচ্ছে না। একটা বেডে দু'জন করে রোগী রাখতে হচ্ছে। অস্থায়ী শ্মশানের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
এই তিনটি রাজ্য ছাড়াও ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান - এই সাতটি রাজ্যের পরিস্থিতিও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই সাতটি রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১২,৩৪৫, ১৯,০৬৭, ১৩,২৫৭, ১০,৭২৩, ১২,২৪৮, ১০,৩৪০, ১০,২৪৮।
গতকালই কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের কয়েকটি দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনার প্রথম ঢেউয়ের মতো দ্বিতীয় ঢেউকেই কাবু করতে সক্ষম হবে ভারত, বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন