কলকাতায় ছড়াচ্ছে চিকেন পক্স, একমাসে মৃত ৭ - জানুন ডাক্তারদের পরামর্শ

চিকিৎসকদের মতে, চিকেন পক্স খুবই ছোঁয়াচে রোগ। খুব দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সুস্থ মানুষের শরীরে তা ছড়িয়ে পরে। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা থুতুর মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায়।
কলকাতায় ছড়াচ্ছে চিকেন পক্স, একমাসে মৃত ৭ - জানুন ডাক্তারদের পরামর্শ
প্রতীকী ছবি
Published on

করোনার প্রকোপ কমলেও, চিকেন পক্স (Chicken pox) নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। গত এক মাসে, কলকাতায় ভাইরাসঘটিত এই রোগে প্রাণ হারিয়েছেন সাত জন।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে জানা গেছে, গত এক বছরে শুধুমাত্র কলকাতাতেই চিকেন পক্সে প্রাণ গেছে ৩৫ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন দু’হাজারেরও বেশি। আর, চলতি মাসেও সেই সংক্রমণ থেমে নেই। বেলেঘাটা আইডিতে এখন চিকেন পক্সের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন সাত জন ব্যক্তি। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা সংকটজনক।

চিকিৎসকদের মতে, চিকেন পক্স খুবই ছোঁয়াচে রোগ। খুব দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সুস্থ মানুষের শরীরে তা ছড়িয়ে পরে। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা থুতুর মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায়। এমনকি, রোগীর সংস্পর্শে এলেও রোগ ছড়াতে পারে। শরীরে ভাইরাস ঢোকার সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ধীরে ধীরে উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। চিকেন পক্সের ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে এই রোগের প্রকোপ থেকে রেহাই মেলে। বাচ্চাদের আগে থেকেই তাই পক্সের ভ্যাকসিন দিয়ে রাখা হয়।

আইডি হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. বিশ্বনাথ শর্মা সরকার জানিয়েছেন, 'কোনও ব্যক্তির গায়ে র‍্যাশ বা দানার মতো জলভরা গুটি দেখা দিলেই আলাদা ঘরে রাখতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত সামগ্রী কেউ ধরবে না। দেখা গিয়েছে, শুরুর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলে চিকেন পক্স নিয়ন্ত্রণে আসে। যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বা যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগেরই চিকিৎসা শুরু হয়েছিল দেরিতে।'

বিশ্বনাথবাবু বলেন, 'জলবসন্তে মৃত ও আক্রান্তদের কেস হিস্ট্রি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ব্যক্তিরই তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ, ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে। ফুসফুসের কোষগুলো রসস্থ হয়ে পড়ায় অক্সিজেন ফুসফুসে ঢুকতে পারে না। একইভাবে মস্তিষ্কেও অক্সিজেন পৌঁছতে বাধা পায়। ফলে রোগী ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে, কিডনি, ফুসফুসের স্বাভাবিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়।'

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত পক্সের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাময়িকভাবে কমে যায়। সচেতন না হলে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁচি-কাশি, পেটের গোলমাল দেখা দিতে পারে। কোনও পুরনো বা জটিল রোগ থাকলে পক্সের কারণে তা আরও বাড়তে পারে। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রাণহানির আশঙ্কাও থেকে যায়। তাই উপসর্গ দেখা দিলেই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in