প্রতিদিন ধূপ জ্বালানো একটি সিগারেটের ধোঁয়ার সমান ক্ষতিকর! হতে পারে ক্যান্সার - সতর্কতা চিকিৎসকের

People's Reporter: দেহরাদুনের পালমোনোলজিস্ট ডাক্তার সোনিয়া গোয়েল সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জানান, প্রতিদিন ধূপ জ্বালানো আসলে ফুসফুসে ধীরে ধীরে ক্ষতি ডেকে আনে।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি - সংগৃহীত
Published on

ধূপ বা আগরবাতি - ভারতীয় পরিবারে প্রতিদিনের অভ্যাসের অঙ্গ! কখনও পূজা-পাঠে, কখনও ধ্যান বা আবার কখনও ঘরে মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে - ধূপ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সুগন্ধের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, ধূপের ধোঁয়া শ্বাসযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর এবং দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব তামাকের ধোঁয়ার মতোই বিপজ্জনক হতে পারে।

ধূপ মানেই ‘ধীরে ধীরে বিষ’

দেহরাদুনের পালমোনোলজিস্ট ডাক্তার সোনিয়া গোয়েল সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জানান, প্রতিদিন ধূপ জ্বালানো আসলে ফুসফুসে ধীরে ধীরে ক্ষতি ডেকে আনে। তাঁর মতে, এটি কার্যত ‘স্লো পয়জন’ ধীরে ধীরে বিষক্রিয়ার মতো কাজ করে।

এটি কীভাবে ক্ষতিকারক?

ডাক্তার গোয়েলের মতে, ধূপ জ্বললে তৈরি হয় সূক্ষ্ম কণিকা (PM2.5), কার্বন মনোক্সাইড এবং নানা ধরনের ভোলাটাইল অর্গ্যানিক কম্পাউন্ড (VOC)। এ সব মিশে ঘরের বাতাস দূষিত করে তোলে। বিশেষ করে জানলা-দরজা বন্ধ ঘরে দীর্ঘক্ষণ ধোঁয়া থাকলে তা শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে ফুসফুসকে দুর্বল করে দেয়।

একটি ধূপ মানে একটি সিগারেট

তাঁর দাবি, গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, একটি ধূপ জ্বালালে যে পরিমাণ ক্ষতিকর কণিকা তৈরি হয়, তা একটির সমান সিগারেটের ধোঁয়ার সমান। অর্থাৎ আপনি ধূমপায়ী না হলেও নিয়মিত ধূপের ধোঁয়ার সংস্পর্শে থাকলে সেটা কার্যত প্যাসিভ স্মোকিংয়ের মতোই ক্ষতি ডেকে আনে।

বিপদে শিশুরা ও বয়স্করা

শিশু, বৃদ্ধ, হাঁপানি বা দুর্বল ফুসফুসের রোগীরা এই ধোঁয়ার প্রতি সবচেয়ে সংবেদনশীল। সামান্য ধোঁয়াতেই তাঁদের কাশি, অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, সিওপিডি কিংবা ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

সতর্ক থাকার উপায়

ডাক্তার গোয়েল অবশ্য জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যে ধূপ ব্যবহার করলে খুব বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে শর্ত হল যথেষ্ট বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। জানলা খুলে রাখা বা ফ্যান চালু করলে ঝুঁকি অনেকটা কমানো যায়।

বিকল্প পথও আছে

ধর্মীয় আচার বা মানসিক শান্তির জন্য ধোঁয়ার ওপর নির্ভর না করে ইলেকট্রিক প্রদীপ, এসেনশিয়াল অয়েল ডিফিউজার বা প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এগুলোও আধ্যাত্মিকতার অনুভূতি দেয়, আবার ফুসফুসের ক্ষতিও করে না।

তাঁর পরামর্শ, ধূপ জ্বালালে ঘরে যেন ক্রস ভেন্টিলেশন থাকে। আর যদি কাশি বা শ্বাসকষ্ট দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in