
প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার সকালে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান শিল্পী। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। যতদিন বাঙালি থাকবে, ততদিন থেকে যাবে প্রতুলের সৃষ্টি ‘আমি বাংলার গান গাই’।
অন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হন প্রবীণ শিল্পী। সোমবার রাতে অসুস্থতার জেরে তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। এরপর অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তরিত করা হয় আইটিইউতে। সেখানেই শনিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কয়েকদিন আগেই অসুস্থ প্রতুলকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুপুর দুটো থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত রবীন্দ্রসদনে রাখা থাকবে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ। শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন তাঁর অনুরাগীরা। বিকেল ৪টে নাগাদ শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে রবীন্দ্রসদনে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর এসএসকেএম হাসপাতালেই শিল্পীর দেহ দান করা হবে।
১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্ম প্রতুল মুখোপাধ্যায়। দেশভাগের সময় পরিবারের সঙ্গে এপার বাংলায় চলে আসেন তিনি। থাকতে শুরু করেন চুঁচুড়ায়। ছোটো থেকেই কবিতায় সুর দিতেন প্রতুল। কবি মঙ্গলচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি ধান কাটার গান গাই’ কবিতা দিয়ে শুরু। নিজেও লিখতেন গান। তবে কখনও প্রথাগত সঙ্গীতের শিক্ষা নেননি তিনি। বাংলা আধুনিক গান থেকে জাপানি গান, আবার হিন্দি ছবির গান থেকেও উপাদান সংগ্রহ করেছেন।
প্রতুলের জীবনের প্রথম অ্যালবাম ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ (১৯৮৮)। তবে এটা তাঁর একক অ্যালবাম ছিল না। ১৯৯৪ সালে ‘যেতে হবে’ তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম। শেষ অ্যালবাম ‘ভোর’ (২০২২)। ‘আমি বাংলায় গান গাই’ ছাড়াও প্রতুলের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘আলু বেচো’, ‘ছোকরা চাঁদ’, ‘তোমার কি কোনও তুলনা হয়’, ‘সেই মেয়েটি’, ‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ’, ‘ডিঙা ভাসাও সাগরে’ ইত্যাদি।
এছাড়া, ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবিতে নেপথ্য শিল্পী হিসেবেও কাজ করেছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া বাংলার সঙ্গীত জগতে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন