
বাংলায় এবার ঋত্বিক ঘটকের ছবি প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার নাকতলা অঞ্চলের একটি স্কুলে। অভিযোগ, ছবির নামে ‘লেনিন’ শব্দটি থাকায় শাসক দলের হুমকির মুখে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। যার জেরে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায় ওই স্কুলে।
স্কুলটি শাসক দলের প্রাক্তন মন্ত্রী, দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে জেলবন্দী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাড়ার ঐতিহ্যবাহী নাকতলা হাই স্কুল। সেখানে ঋত্বিক ঘটকের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর দু’টি সিনেমা ‘কোমল গান্ধার’ ও ‘আমার লেনিন’ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় প্রদর্শনী শুরু হওয়ার কথা ছিল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে যথাযথ অনুমতি নেওয়া হয়েছিল উদ্যোক্তা সংগঠন 'সেতু'-র পক্ষ থেকে। তবে প্রধান শিক্ষককে দেওয়া চিঠিতে কী কী ছবি দেখানো হবে তার উল্লেখ ছিল না, যদিও প্রচারের ব্যানার, লিফলেট ও বিভিন্ন সমাজ-মাধ্যমে এই দুটি ছবির নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। স্কুলের সমস্ত শিক্ষকদেরও এই প্রদর্শনে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান উদ্যোক্তারা।
অভিযোগ, ৫ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই বেঁকে বসেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি জানান, “কতিপয় ব্যক্তি তাঁকে বলে গেছেন চিত্র প্রদর্শনী হলে বিদ্যালয় ভাঙচুর করা হবে। তাঁদের আপত্তি বিশেষ করে ‘আমার লেনিন’ –সিনেমার বিরুদ্ধে”। প্রধান শিক্ষকের দাবি, তিনি মনে করেছিলেন চলচ্চিত্র সম্পর্কে আলোচনা হবে। সেজন্য তিনি অনুমতি দিয়েছিলেন।
তিনি জানান, ব্যানারে যে চলচ্চিত্র দুটির নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেই বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না। আপত্তিকারীদের দেখানো এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে জেনেছেন। নামগুলো তাঁকে আগে থেকে জানানো হয়নি। এরপরই স্কুলে সিনেমা প্রদর্শন অনুষ্ঠানটি না করার জন্য বলেন তিনি।
তখন 'সেতু' সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করা হয়, ‘আমার লেনিন’ সিনেমাটি বাদ দিয়ে, শুধু ‘কোমল গান্ধার’ ছবিটি দেখালে অনুমতি মিলবে কিনা। তবে তিনি সেটাতেও আপত্তি জানান।
এরপর সংগঠনের পক্ষ থেকে স্থানীয় ক্লাব বহ্নি-তে ছবি প্রদর্শনীর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। প্রথমে ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফে অনুমতি দেওয়া হলেও, পরে জানানো হয়, তাঁদের পক্ষে কোনো ছবি প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তাঁদের উপর 'চাপ' রয়েছে।
যার ফলে আপাতত ছবি প্রদর্শনী বন্ধ রাখা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। তবে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, দ্রুতই তারা খোলা রাস্তায় স্ক্রিনিং করে চলচ্চিত্র দু’টি দেখাবার পরিকল্পনা নিচ্ছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন