
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শোধরাতে কর্মীদের ৯০ ঘন্টা কাজ করার নিদান দিয়েছেন বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা লারসেন অ্যান্ড টুব্রো বা এলঅ্যান্ডটি সংস্থার চেয়ারম্যান এস এম সুব্রহ্মণ্যম। তিনি বলেন, ‘রবিবারও সংস্থার কর্মীদের কাজ করা উচিত। বাড়িতে বসে কত সময় স্ত্রীর মুখ দেখবেন?’ এমন অদ্ভূত নিদান প্রকাশ্যে আসতেই নেটপাড়ায় উঠেছে নিন্দার ঝড়। এমনকি সুব্রহ্মণ্যমের সমালোচনা করেছেন দীপিকা পাডুকোনও।
২০১৫ সালে নিজের মানসিক অবসাদের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাডুকোন। প্রায় এক দশক ধরে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে প্রচার করছেন দীপিকা। ‘Live Love Laugh’ নামক তাঁর নিজস্ব একটি সংস্থাও রয়েছে। সুব্রহ্মণ্যমের ৯০ ঘন্টা কাজের নিদান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দীপিকা।
নিজের ইনস্টগ্রাম স্টোরিতে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে দীপিকা লেখেন, 'কোনও সংস্থার উচ্চ পদে থাকা কোনও ব্যক্তির এমন মন্তব্য দেখে হতবাক হচ্ছি’।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার এক ভাইরাল ভিডিওতে এলঅ্যান্ডটি সংস্থার চেয়ারম্যান সুব্রহ্মণ্যমকে সপ্তাহে রবিবার সহ ৯০-ঘণ্টার কাজের পক্ষে কথা বলতে শোনা গেছে। ‘ইন্ডিয়াকেরিয়ার্স’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে রেডিটে প্রথম শেয়ার করা ওই ভিডিওতে সুব্রহ্মণ্যম তাঁর কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘রবিবার আমদের সমস্ত কাজ বন্ধ থাকে। এর জন্য আমার আফসোস হয়। যদি রবিবার অফিস খোলা থাকত, আমিও কাজ করতাম এবং আপনাদের দিয়ে কাজ করাতাম তাহলে খুশি হতাম। বাড়িতে এত ক্ষণ থেকে কী করবে মানুষ? কত ক্ষণ একজন স্বামী তাঁর স্ত্রীর মুখ দেখবেন? একজন স্ত্রীই বা কত ক্ষণ বাড়ি বসে তাঁর স্বামীর মুখ দেখতে পারবেন? তার চেয়ে ভাল হয় সকলে অফিসে গিয়ে কাজ করুন। তাতে জীবনে উন্নতি হবে।’’
ওই বহুজাতিক সংস্থার একটি বিবৃতির স্ক্রিনশট নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে শেয়ার করেছেন দীপিকা পাডুকোন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘এঁরাই দেশের কর্মসংস্কৃতি আরও নষ্ট করছে’।
উল্লেখ্য, দীপিকার শেয়ার করা লারসেন অ্যান্ড টুব্রো-র ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দেশ নির্মাণ আমাদের মূল উদ্দেশ্য৷ আট দশকেরও বেশি সময় ধরে আমরা ভারতের পরিকাঠামো, শিল্প এবং প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোকে রূপ দিচ্ছি। আমরা এমন একটি সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি যেখানে সম্মিলিত অগ্রগতির জন্য আরও উৎসাহ প্রয়োজন। আমাদের দেশ সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নত দেশ হয়ে উঠতে পারবে। এলঅ্যান্ডটি-তে আমরা এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে আবেগ, উদ্দেশ্য এবং কর্মক্ষমতা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে’।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন