
‘এমারজেন্সি’ মুক্তির দিনেই উত্তেজনা ছড়ালো পাঞ্জাবে। বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াত অভিনীত এই চলচ্চিত্র আজই মুক্তি পেয়েছে। যদিও ছবি মুক্তির আগেই শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (SGPC)-র পক্ষ থেকে ছবিটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে পাঞ্জাব জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। এসজিপিসি-র বিক্ষোভের জেরে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পাঞ্জাবের একাধিক সিনেমাহলের সামনে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে। আজ রাজ্যে এই সিনেমা দেখানো হচ্ছে না। সংবাদসংস্থা সূত্রে একথা জানা গেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকেই পাঞ্জাবের বিভিন্ন সিনেমা হলের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে এসজিপিসি। তাদের অভিযোগ, বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াতের এই সিনেমা দেশের ভ্রাতৃত্ববোধকে ‘আঘাত’ করবে। ইতিমধ্যেই লুধিয়ানা, ভাতিন্দা, জলন্ধর, মোহালি প্রভৃতি স্থান থেকে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
এসজিপিসি সভাপতি হরজিন্দর সিং ধামি জানিয়েছেন, ‘এমারজেন্সি’ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে তারা সব জায়গায় বিক্ষোভ দেখাবেন। কারণ এই চলচ্চিত্রে শিখদের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে এবং ১৯৮৪-র ঘটনা ‘বিকৃতভাবে’ তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটি বাতিল করার দাবিতে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভাগবত মানকে চিঠিও লিখেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ধামি জানিয়েছেন, “যদি ছবিটি ১৭ জানুয়ারী মুক্তি পায়, তাহলে এটি শিখ সমাজকে বিক্ষুব্ধ করে তুলবে, যা স্বাভাবিক।” চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “শিখদের পবিত্র স্থানগুলিতে হামলার তথ্য গোপন করে এবং বিষ ছড়িয়ে এই সিনেমাটি শিখদের অপমান করার একটি চক্রান্তের অধীনে কাজ করছে।"
বিজেপি সাংসদের ছবি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেসও। পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিং রাজা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সরকার এবং সেন্সর বোর্ড-এর ‘এমারজেন্সি’ ছবিটির দিকে ভালো করে লক্ষ্য করা উচিত। কারণ এই চলচ্চিত্রে এমন কিছু দেখানো হয়েছে যা সত্যি নয়। তথ্যকে বিকৃত করা হয়েছে। কারণ তা না করা হলে তারা এই ছবির সাফল্য দেখতে পাবে না।
কঙ্গনা-র ‘এমারজেন্সি’ প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাঞ্জাবের কৃষক নেতৃত্বও। তাদের একটি দল মোহালি, জিরকাপুরের ধীলোন প্লাজা এবং কসমো প্লাজা সিনেমা হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কৃষকদের অভিযোগ, কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন কঙ্গনা রানাওয়াত তাদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন।
প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর শাসনকালে ‘জরুরি অবস্থা’ জারির সময়কার বিষয় নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘এমারজেন্সি’। এই চলচ্চিত্রটির পরিচালনা এবং ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিজেপি সাংসদ ও বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। ছবিটিতে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দ্বারা জারি করা ২১ মাসের বিতর্কিত জরুরি অবস্থার বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এই সময়কে ভারতের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে প্রায়শই বর্ণনা করা হয়। ছবিটিতে জয়প্রকাশ নারায়ণের চরিত্রে অনুপম খের, অটল বিহারী বাজপেয়ীর চরিত্রে শ্রেয়স তালপাড়ে এবং ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশের চরিত্রে মিলিন্দ সোমান অভিনয় করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন