মাদক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটরেট (ED) দপ্তরে হাজিরা দিলেন অভিনেতা রাকুল প্রীত সিং। চার বছরের পুরোনো এক মাদক মামলা এবং অর্থ পাচারের মামলার তদন্তে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার তিনি ইডি দপ্তরে হাজিরা দেন।
এদিন সকাল ৯.১০ নাগাদ নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে তিনি হায়দারাবাদে ইডি অফিসে পৌঁছান।
ইডি-র পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ সেপ্টেম্বর রাকুলকে তলব করা হয়। কিন্তু তিনি ব্যস্ত শুটিং শিডিউলের কথা উল্লেখ করে আরও সময় চেয়েছিলেন। যদিও তদন্তকারী সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ স্থগিত করতে অস্বীকার করে এবং নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগে তাকে উপস্থিত হতে বলে।
এই ঘটনায় রাকুল প্রীত তৃতীয় টলিউড ব্যক্তিত্ব যাকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এর আগে পরিচালক পুরী জগন্নাথকে মঙ্গলবার প্রায় ১০ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং অভিনেতা চার্ম্মে কৌরকে বৃহস্পতিবার প্রায় আট ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি।
সূত্র অনুসারে, ইডি কর্মকর্তারা মাদক মামলায় জড়িতদের সাথে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের কোনো আর্থিক লেনদেন আছে কিনা সেই সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
এর আগে পরিচালক পুরী এবং চার্ম্মে দুজনকেই এই মামলার প্রধান আসামী ক্যালভিন মাসকারেনহাসের সঙ্গে সন্দেহজনক সম্পর্ক সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ইডি গত সপ্তাহে মাদক মামলা এবং অর্থ পাচার সংক্রান্ত মামলার অংশ হিসেবে টলিউডের সাথে যুক্ত ১০ জন এবং এক বেসরকারি ক্লাবের ম্যানেজার সহ দুজনকে নোটিশ জারি করেছে।
অভিনেতা রাকুল প্রীত সিং, রানা দগ্গুবতী, রবি তেজা, চর্ম্মে কৌর, নবদীপ, মুমাইথ খান এবং পরিচালক পুরী জগন্নাথকে ED ৩১ আগস্ট থেকে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাজিরা দেবার কথা জানিয়েছে।
২০১৭ সালে যে ড্রাগ র্যাকেট ফাঁস হয়েছিলো সেই ঘটনায় তানিশ, নান্দু, অভিনেতা রবি তেজার চালক শ্রীনিবাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেই সময় রাকুল প্রীত সিং এবং রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তেলেঙ্গানার প্রোহিবিশান অ্যান্ড এক্সাইজ বিভাগ এই মামলার তদন্ত করেছে।
২০১৭ সালের ২ জুলাই এই মাদক র্যাকেট ধরা পড়ে। সেই সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা ক্যালভিন মাসকারেনহাস, এক সঙ্গীতশিল্পী এবং অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়।
তারা তদন্তকারীদের বলেছিলেন যে তারা ফিল্ম সেলিব্রিটি, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং এমনকি কিছু কর্পোরেট স্কুলের ছাত্রদের এই মাদক সরবরাহ করে। কিছু টলিউড সেলিব্রেটিদের মোবাইল নম্বর তাদের যোগাযোগের তালিকায় পাওয়া যায় বলে অভিযোগ।
আবগারি বিভাগ বিস্তারিত তদন্তের জন্য এসআইটি (SIT) গঠন করে। মোট ১২ টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও টলিউডের সাথে জড়িত ১১ জন সহ মোট ৬২ জঙ্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবসটেন্স (NDPS) আইনের ৬৭ ধারা অনুসারে সিট এই মামলার তদন্ত করছে। এছাড়াও ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট-এর ১৬১ ধারা অনুসারে তদন্ত চলছে। এসআইটি অভিযুক্ত কয়েকজনের কাছ থেকে রক্ত, চুল, নখ এবং অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং বিশ্লেষণের জন্য পাঠিয়েছে।
অভিনেতা রবি তেজা, চার্ম্মি কাউর, মুমাইথ খান, পরিচালক পুরী জগন্নাথ এবং তরুণ অভিনেতা তরুণ কুমার এবং পি নভদীপ তারকাদের এসআইটি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এছাড়াও চিত্রগ্রাহক শ্যাম কে নাইডু, অভিনেতা সুব্বারাজু, তানিশ, নন্দু এবং রবি তেজার ড্রাইভার শ্রীনিবাসকে জিজ্ঞাসাবাদের করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ১২ টি মামলার মধ্যে ৮টিতে চার্জশিট দাখিল করেছে এসআইটি। যদিও তদন্তের অংশ হিসেবে যেসব চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাদের ক্লিন চিট দেওয়া হয়েছে।
- with Agency Input
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।