

বহিরাগতদের হামলার জেরে ভেস্তে গেল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেমসের কনসার্ট। ফরিদপুর জিলা স্কুলের ঘটনা। হামলার জেরে প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে কয়েকজন ছাত্রও আছে।
শুক্রবার ফরিদপুর জেলা বিদ্যালয়ের ১৮৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেমস ও তাঁর ব্যান্ডের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানটি কেবল নিবন্ধিত প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল। কিন্তু জেমস আসবেন শুনে কয়েক হাজার অনিবন্ধিত দর্শক সেখানে চলে আসেন। অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে তাঁরা পাশের সড়কে অবস্থান নেন।
অনিবন্ধিত দর্শকের ভিড় ক্রমশ বাড়ায় বাইরে কর্তৃপক্ষ দুটি প্রজেক্টরও লাগিয়ে দেয়। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট হননি তাঁরা। একপর্যায়ে পাঁচিল টপকে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন তাঁরা। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বাধা দিলে তাঁরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। মঞ্চের দিকে একের পর এক ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ সূত্রে খবর, ‘বহিরাগত’ তাণ্ডবে পুনর্মিলনী কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান শামীমসহ ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিল্পীর শারীরিক কোনও ক্ষতি হয়নি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই তাণ্ডবের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই খতনায় ক্ষুব্ধ লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আক্রমণের ভিডিও পোস্ট করে তিনি লেখেন, "ফরিদপুর জিলা স্কুলে জেমসের প্রোগ্রাম পণ্ড হলো। জেমসকে গান গাইতে দেবে না তৌহিদী জনতা। দেশে ছায়ানট থাকবে না, উদীচী থাকবে না, বাউল থাকবে না, নগর বাউল থাকবে না, তবলা হারমোনিয়াম গিটার থাকবে না। সুর থাকবে, সে শুধু আজানের সুর। আর কোনও সুর নয়। জিহাদিদের সাফ কথা। মানলে ভাল। না মানলে মুণ্ডু যাবে। জিহাদিস্থানে গান নিষিদ্ধ।"
অন্য একটি পোস্টে তিনি আরও লেখেন, "সংস্কৃতি ভবন ছায়ানট পুড়ে ছাই। গান, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি এবং লোকজ সংস্কৃতির প্রসারের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল চেতনা বিকাশের জন্য গড়ে ওঠা সংগঠন উদীচী পুড়ে ছাই। আজ বিখ্যাত গায়ক জেমসকে অনুষ্ঠানে গান গাইতে দেয়নি জিহাদিরা। কিছুদিন আগে ঢাকায় এসেছিলেন সিরাজ আলী খান। তিনি বিশ্বখ্যাত সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ছেলে আলী আকবর খানের নাতি। সিরাজ আলী খানও মাইহার ঘরানার সংগীতের একজন খ্যাতিমান শিল্পী। সিরাজ আলী খান ঢাকায় এসে অনুষ্ঠান না করেই ভারতে ফিরে গিয়েছেন। বলেছেন শিল্পী, সংগীত এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে আর আসবেন না। দু'দিন আগে ওস্তাদ রশীদ খানের ছেলে আরমান খানও ঢাকার আমন্ত্রণ রক্ষা করেননি, তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন সংগীতবিদ্বেষী জিহাদি অধ্যুষিত বাংলাদেশে তিনি পা রাখতে চান না।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন