

প্রযুক্তি একদিকে যেমন আশীর্বাদ, তেমনই সঠিক হাতে না থাকলে সেই আশীর্বাদ অভিশাপ হয়ে যেতে পারে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এক ডিপফেক ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে সেই কথাটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। টুইটারে ভাইরাল হয়ে যাওয়া দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্ডানার ওই ডিপফেক ভিডিও সরব হয়েছেন অনেকেই। আইনি পদক্ষেপ চেয়েছেন বলিউডের বিগ বি অমিতাভ বচ্চন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।
সম্প্রতি টুইটারে ‘পুস্পা’ খ্যাত অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্ডানার একটি ভিডিও কার্যত ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। মাত্র ৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে রাশ্মিকাকে একটি কালো টপ পরে লিফটের মধ্যে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে। এটি যে আসলে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি নকল ভিডিও তা প্রথম দর্শনে ধরতে পারা এক কথায় প্রায় অসম্ভব।
সত্যসন্ধানকারী 'আল্ট নিউজ-এ কর্মরত সাংবাদিক অভিষেক প্রথম এই বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “ভারতে ডিপফেক ভিডিওর সঙ্গে লড়াই করার জন্য অবিলম্বে আইনি পদক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রয়োজন। আপনি হয়তো অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্ডানার এই ভাইরাল ভিডিওটি দেখেছেন। কিন্তু আসলে এটি জারা প্যাটেল নামক একজনের ভিডিও।” আরেকটি পোস্টে তিনি জনৈক জারা প্যাটেলের আসল সেই ভিডিওটি জুড়ে দিয়ে লিখেছেন, আসল ভিডিওটি জারা প্যাটেলের। ব্রিটিশ-ভারতীয় ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার’ জারা ৪ লক্ষেরও বেশি অনুগামী নিয়ে ইনস্টাগ্রামে ব্যাপক জনপ্রিয়। গত ৯ অক্টোবর তিনি আসল ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছিলেন।
কারও অনুমতি না নিয়ে তার ডিপফেক ভিডিও বানিয়ে সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করাকে দণ্ডনীয় হিসেবে দাবি করে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন অনেকেই। এমনকি বলিউড কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চনও ওই ভিডিও পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, “আইনি পদক্ষেপের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ মামলা।” ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গুডবাই’ ছবিতে অমিতাভের সহ-অভিনেত্রী রাশ্মিকার হয়ে এই ঘটনার কঠোর আইনি পদক্ষেপের দাবিতে সুর চড়িয়েছেন বিগ বি’ও।
তবে ভিডিওটি খুব মন দিয়ে দেখলে ০.১ সেকেন্ডের মাথাতেই ভিডিওর আসল কারসাজি চোখে পড়বে। ভিডিওর শুরুতে যখন মেয়েটি (জারা) লিফটের মধ্যে প্রবেশ করছে, তখন মুহূর্তের মধ্যে তাঁর মুখ বদলে গিয়ে তার জায়গায় দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশ্মিকার মুখ বসে যেতে দেখা যাবে। তবে এতটাই নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, সাধারণ যেকোনো দর্শক এটিকে খুব সহজেই সত্যি বলে মেনে নেবেন। কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে এইধরণের ভিডিও এত সহজে মানুষকে বোকা বানিয়ে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন