এবার মৃণাল সেনের স্মৃতি বিজড়িত ফ্ল্যাটটিও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে

মৃণাল সেন
মৃণাল সেনফাইল ছবি সংগৃহীত

আর কয়েকদিনের মধ্যেই কলকাতায় চিত্রপরিচালক মৃণাল সেনের শেষ স্মৃতি, বসবাসের ফ্ল্যাটটিও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর আগে কালজয়ী চিত্রপরিচালক আক্ষেপের সুরে বলতেন তাঁর মৃত্যুর পর সবই তো হারিয়ে যাবে। কে দেখাশোনা করবে তার জিনিসপত্র, ফ্ল্যাট ইত্যাদি। তাঁর সেই আক্ষেপই আজ বাস্তব হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার ৩৮, পদ্মপুকুর রোডের ফ্ল্যাটটির মালিকানা হস্তান্তর হতে চলেছে।

এই ফ্ল্যাটেই দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর থেকেছেন মৃণাল সেন। এই ফ্ল্যাটে বসেই কত চলচ্চিত্রের রূপরেখা রচনা করেছিলেন। মৃণালবাবুর একমাত্র পুত্র কুণাল সেন থাকেন বিদেশে। তিনি ফ্ল্যাটটি আর রাখতে চান না বলে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন মৃণালবাবুর দীর্ঘদিনের চিকিৎসকের হাতে। গত বছর ৩০ ডিসেম্বর মৃণালবাবুর মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্যে শেষবারের মতো কলকাতায় এসেছিলেন তাঁর পুত্র। পিতার শিল্পকর্ম ও অমূল্য সংগ্রহে তার কোনও আগ্রহ নেই বলেই জানিয়ে গিয়েছিলেন। এবার সেই ফ্ল্যাটের বিক্রি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।

কিছুদিন আগে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু মৃণাল সেনের শয্যাটি নিয়ে যান। তিনি ওই শয্যা সংরক্ষণের জন্য দিনকয়েক আগে তুলে দিয়েছেন পিপলস রিলিফ কমিটির হাতে। বহরমপুরের সিনে সেন্ট্রাল মৃণালবার চশমা এবং টেলিফোনটি নিয়ে গিয়েছে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য। মুম্বইয়ের একটি সংগ্রহশালাও মৃণাল সেনের ব্যবহার করা কলম , পাঞ্জাবি, চেয়ার সহ একাধিক জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছে। বিদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তার তৈরি সিনেমার স্টিল ছবি এবং পাণ্ডুলিপি নিয়ে গিয়েছে গবেষণার কাজে ব্যবহার করার জন্য।

শোনা যায়, সাধের সংগ্রহশালা রক্ষা করা যাবে না, এই আক্ষেপে ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে বেশ কিছু বই ও স্মারক রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন মৃণালবাবু। ২০০৩ সালে পদ্মপুকুরের ফ্ল্যাটটিতে চলে আসেন তিনি। তারপর দীর্ঘ পনেরো বছর সেই ফ্ল্যাটেরই স্মৃতি জড়িয়ে আছে বাংলা চলচ্চিত্রে। যে ফ্ল্যাটে নিজের শেষ জীবন কাটিয়েছেন “আকালের সন্ধানে, 'পদাতিক’-এর পরিচালক।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in