ভর্তির দাম বেড়েছে - 'হায়রে কপাল করবো কী?'

ছবি প্রতীকী সংগৃহীত
ছবি প্রতীকী সংগৃহীত

বলতে পারলে ভালো লাগতো। কিন্তু বলা যাচ্ছে কি? বোধহয় না। কারণ পশ্চিমবঙ্গের কোনও মুখ্যমন্ত্রী কলেজে ছাত্রভর্তিতে দুর্নীতি রুখতে, টাকার খেলা বন্ধ করতে কলেজ সফরে যাচ্ছেন – এরকম কোনও নজির রাজ্যের ইতিহাসে সম্ভবত নেই। তাই বাহবা বা সাধুবাদ দেবার আগে একবার ভাবা দরকার কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হল যাতে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও সময় করে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে কলেজে কলেজে যেতে হচ্ছে?

কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে এবছরই যে প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সেরকমটা নয়। বলা ভালো, সাম্প্রতিক সময়ে প্রতি বছরই এই অভিযোগ উঠে থাকে। চাপাও পড়ে যায়। কলেজে ছাত্র ভর্তিকে কেন্দ্র করে তোলাবাজী নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখেই ব্যবস্থা করা হয়েছিলো অনলাইন অ্যাডমিশনের। যদিও ভূত যেখানে সর্ষের মধ্যেই সেখানে অবস্থা বদলাবে না সেটাই স্বাভাবিক।

এবং সেটাই হয়েছে। প্রতি বছরই হয়। এবছর যা প্রবল আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্রের পাতা উল্টোলে কোন কলেজে, কোন স্ট্রিমে ভর্তির রেট কত, তা ভর্তি হতে যাবার আগেই ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা জেনে যাচ্ছেন। শোরগোল পড়ে যাওয়াতে বেশ কিছু গ্রেপ্তারির ঘটনাও ঘটেছে এবং গ্রেপ্তার হওয়া সকলেই রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন অথবা শাসকদল ঘনিষ্ঠ বলেই অভিযোগ। যদিও ইতিমধ্যেই জামিন হয়েছে সকলেরই।

কোন জমানা ভালো, কোন জমানা খারাপ সেই তুল্যমূল্য বিচার নাই বা করা হল। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার বয়স বেশি নয়। নেট দুনিয়ারও। কিন্তু পুরোনো বেশ কয়েক বছরের – ধরে নিন ৩০, ৪০ কিংবা তারও বেশি – খবরের কাগজ তন্নতন্ন করে ঘেঁটে ফেললেও কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত এই ধরণের গোলযোগ কিংবা ছাত্র ভর্তিতে স্ট্রিম পিছু রেট বেঁধে দেওয়ার খবর একটাও বের করা যাবে কিনা সন্দেহ। হয়তো হয়েছে, কিংবা হয়নি। হলেও সেটা এতই গৌণ আকারে ছিলো যে তা সংবাদমাধ্যমে জায়গা দখল করতে পারেনি। ফলত, বিগত সময়ে কোনোদিনই পশ্চিমবঙ্গের কোনও মুখ্যমন্ত্রী কিংবা শিক্ষামন্ত্রীকে ছাত্র ভর্তির দুর্নীতি, তোলাবাজী বন্ধ করতে সাংবাদিক সম্মেলন বা কলেজ সফর – কোনটাই করতে হয়নি।

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। প্রশাসন সচেষ্ট হলে অনেক কিছুই করা যায়। কলকাতা পুলিশ, রাজ্য পুলিশের কর্মদক্ষতা এখনও প্রশ্নাতীত। সমাধান করা যায় কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন ভর্তির ব্যবস্থা করেও। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে শাসকদল ঘনিষ্ঠ একদল ছাত্রছাত্রীর সামনে যেভাবে মধুভান্ডর দরজা খুলে গেছে তা শুধুমাত্র সদিচ্ছা দিয়ে আগামীদিনে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন!!!

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in