নিতান্তই নিরীহ, গুরুত্বহীন এবং লঘু এক ঘটনাকে ঘিরে সব নজর ঘুরে গেল যাদবপুরে। অথচ গতকালই আদালত জানিয়ে দিয়েছে প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের গ্রেপ্তারিতে কোনো বাধা নেই। সারাদিন সিবিআই-এর বিশেষ দল শহর কলকাতায় আতিপাতি খুঁজেও সন্ধান পায়নি প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের।
এরই সঙ্গে ছিলো আরও বেশ কিছু ঘটনা। যার মধ্যে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লী সফর। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা। যে সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে ধোঁয়াশা আছে এখনও। এন আর সি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অতীতের অবস্থান এবং বর্তমান অবস্থানের পার্থক্যও বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এই বিষয়গুলো নিয়ে দোলাচলতার মাঝেই দুপুরের পর থেকে সুর কেটে যায় অনেকটাই। কেন্দ্রের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের এক অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছাত্র বিক্ষোভের আঁচ ছড়ায় রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও। ঠিক যেভাবে এই বিক্ষোভ এতক্ষণ স্থায়ী হবার যথেষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তেমনই কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তুমুল বিক্ষোভের মাঝে পড়েও মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর ঘটনাস্থলে থেকে যাওয়া এবং ঘটনাস্থল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ফোন করার যে অভিযোগ উঠেছে তারও। এর মাঝেই মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের যে কথোপকথন মানুষ দেখেছেন তাও কতটা ভালো বার্তা দিলো সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। বহু পরে, রাজ্যপালের গাড়িতে চেপে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন।
বাম ছাত্র সংগঠন এস এফ আই এদিনের ঘটনায় মাননীয় মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুললেও, স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে, দেশের কোনো ক্যাম্পাসেই কারোর প্রবেশাধিকারে হস্তক্ষেপ করাকে সমর্থন করেনা বলেও।
তা সত্ত্বেও প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ হয়েছে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বিক্ষোভে আটকে থেকেছেন অথবা বিক্ষোভের মধ্যে নিজেকে আটকে রেখেছেন তা পরিষ্কার নয়। একইভাবে স্পষ্ট নয় মাননীয় রাজ্যপালের নজিরবিহীন তৎপরতার কারণ। বিষয়টা ছিলো রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর পরে, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবস্থা নেবার আশ্বাসের পরেও তিনি যেভাবে ঘটনাক্রম নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রশ্ন অনেক। উত্তর পাওয়া যাবে না হয়তো অনেক কিছুরই। গতকাল দুপুরের পর থেকে চ্যানেল থেকে চ্যানেল সারফ করে করেও সাধারণ মানুষ যাদবপুর ছাড়া আর প্রায় কিছু পাননি হাতের সামনে। তাহলে কী যাদবপুরে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে বাকি সমস্যাগুলোর ওপর থেকে সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হল? সব লোপাট হয়ে গেল রাতারাতি? প্রশ্ন কিন্তু মনের মধ্যে ঘুরপাক খাবেই। প্রশ্ন উঠবেই।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।