কেন্দ্রীয় বাহিনী নিস্ক্রিয়। এই অভিযোগ তুলে রাস্তায় অবস্থানে বসলেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী শওকত মোল্লা। তৃণমূল প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁর বিরোধী আই এস এফ প্রার্থীর লোকজন বোমাবাজি করলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।
এদিন সকালে মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রেও একই ঘটনা নজরে পড়ে। সেখানেও আই এস এফ প্রার্থী মইদুল ইসলামের সঙ্গে দফায় দফায় বিতর্কে জড়ান তৃণমূল প্রার্থী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা এবং তাঁর দলবল। একসময় তাঁকে বুথে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এই অভিযোগ তুলে ভোটকেন্দ্রের সামনেই অবস্থানে বসেন আই এস এফ প্রার্থী।
রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটের দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলে ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের বুলেনগড় এলাকায় উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু তাজা বোমা। যদিও তৃণমূল প্রার্থীর অভিযোগ কেন্দ্রীয় বাহিনিকে জানানো সত্ত্বেও তারা বিষয়টিতে কোনো গুরুত্ব দেননি। এরপরেই রাস্তায় অবস্থানে বসেন শওকত মোল্লা।
তৃণমূলের এই অভিযোগের উত্তরে আই এস এফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয় ঝামেলা যা করার তা তৃণমূলই করছে। ভোটারদের বাধা দিচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল খাঁ-কে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়ালো আরান্ডির মহল্লাপাড়ায়। অভিযোগ স্থানীয় একটি বুথ থেকে অভিযোগ পেয়ে তিনি ওই অঞ্চলে গেলে সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে স্থানীয় মানুষ। সুজাতা মন্ডলের অভিযোগ – বিক্ষোভকারীরা সকলেই বিজেপি কর্মী।
সুজাতার বক্তব্য অনুসারে – বিজেপি এখানে বুথ দখল করতে চাইছে। অভিযোগ পেয়ে এখানে এলে আমাকে ঘিরে বিজেপি কর্মীরা বাঁশ নিয়ে তাড়া করে। আমাকে মারধোর করা হয়।
যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। উলটে তাঁদের অভিযোগ সুজাতা মণ্ডলের সঙ্গে থাকা লোকজন বিজেপি কর্মীদের মারধোর করলে তাঁরা খেপে যান।
নির্বাচন কমিশনের ভোটার টার্ন আউট অ্যাপ অনুসারে বেল ১টা পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছে ৫২.৩৪%।
যার মধ্যে হুগলীতে ভোট পড়েছে ৫৫.১৮%।
হাওড়াতে ভোট পড়েছে ৫২.৬১%।
দক্ষিণ ২৪ পরগণাতে ভোট পড়েছে ৫১.৬৭%।
রায়দিঘির লালপুরে ভোটারদের এক হাজার টাকা করে কুপন বিলি করছে বিজেপি। এমনই অভিযোগ করলো তৃণমূল ও সিপিআইএম। এই নিয়ে তিন দলের কর্মীদের মধ্যেই বচসা বাঁধে।
সকাল ১১টা পর্যন্ত সার্বিকভাবে রাজ্যে ভোট পড়েছে ৩৪.৭১ শতাংশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ভোটদানের হার ৩২.৩০ শতাংশ।
হুগলিতে ভোটদানের হার - ৩৭.৩৯ শতাংশ।
হাওড়ায় ভোটদানের হার - ৩৭.০৪ শতাংশ।
জয়নগরের ঠাকুরচক এলাকার বুথ থেকে CPIM এজেন্টকে জোর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। খবর পাওয়া মাত্রই সেখানে উপস্থিত হন CPIM প্রার্থী অপূর্ব প্রামাণিক। তিনি নিজে ওই বুথে ফের এজেন্টকে বসিয়ে দিয়ে যান। তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূল ছাড়া এতোক্ষণ ওই বুথে আর কোনো দলের এজেন্ট ছিলেন না।
গোঘাটের ফুলঝাড়ে বিজেপির হয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে মারধর করারও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
আরামবাগের শুভয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই তৃণমূল এজেন্টদের মারধর করার অভিযোগ উঠলো বিজেপির মহিলা কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশের গাড়িতে করে বুথ ছাড়ে ওই তৃণমূল এজেন্ট।
ক্যানিংয়ের বুরানগর এলাকায় চলছে ব্যাপক বোমাবাজি, রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে তাজা বোমা। ঘুমরিতেও ভোটারদের ভয় দেখাতে আইঅএসএফ-এর বিরুদ্ধে বোমাবাজি করার অভিযোগ তুলেছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শওকত মোল্লা।
এদিন সকালে উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া অধিকারী ভেখুটাল প্রাইমারী স্কুল বুথে তাঁকে ঢুকতে না দেওয়ার এবং এজেন্ট বসতে না দেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ঘিরে ধরেন এলাকাবাসী। তাঁকে মিথ্যা কথা না বলার অনুরোধ করা হয়। এলাকাবাসীর বক্তব্য - এজেন্ট বসার মত কেউ নেই। তাই এজেন্ট বসেনি। শুরু হয়ে যায় বচসা। তখন কোনও রকমে বিষয়টা এড়িয়ে যান পাপিয়া।
এরপর একরকম জোর করে ভোট কেন্দ্রের সামনে গিয়ে এজেন্টের সঙ্গে কথা বলতে চান বিজেপি প্রার্থী। প্রথমে তাঁকে বাধা দেওয়া হলেও পরে অবশ্য তাঁর এজেন্ট এসে জানান তিনি বুথের ভেতরেই আছেন। এরপর বুথ ছেড়ে বেরিয়ে যান পাপিয়া অধিকারী।
গোঘাটের বদনগঞ্জ এলাকায় বিজেপি সমর্থক ছেলেকে তৃণমূলের দুষ্কৃতিদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল মা মাধবী আদকের (৫০)। এই ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তারকেশ্বরের রজোবেলা ধরমপুর স্কুলের বুথের বাইরে বিজেপি কর্মীদের মারধর এবং দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছেন প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্ত। অপরদিকে ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থী দীপক হালদারের অভিযোগ, বাসুলডাঙার ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। আতঙ্কে ভোট দিতে যেতে চাইছেন না কেউ। তিনিও কমিশনে নালিশ জানাবেন বলে জানা গেছে।
হুগলির জাঙ্গিপাড়ার ডি এম হাইস্কুলের বুথ থেকে রাজ্য পুলিশের এক কর্মীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো বিজেপি প্রার্থী দেবজিত সরকারের বিরুদ্ধে। প্রার্থীর দাবি, ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে ওই পুলিশ।
মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার ISF প্রার্থীকে বুথে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠলো রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই আঙুল উঁচিয়ে প্রার্থীকে হুমকি দিয়েছে পুলিশ বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে বুথের বাইরেই অবস্থান প্রার্থীর।
সকালে খবর পাওয়া যায় মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার নেতরা হাই মাদ্রাসায় ISF প্রার্থীর এজেন্টকে বুথে বসতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। সেই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান প্রার্থী মইদুল ইসলাম। নিজে গিয়ে এজেন্টকে বসিয়ে আসেন তিনি। এরপর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দিতে বলেন। এতেই তৃণমূলের এজেন্ট তথা পঞ্চায়েত প্রধানের সাথে বচসা বাঁধে তাঁর। প্রার্থীর অভিযোগ, সেইসময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই আঙুল উঁচিয়ে তাঁকে হুমকি দেয় রাজ্য পুলিশ।
এর প্রতিবাদে বুথের বাইরেই অবস্থান করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরে অবস্থান তুলে নেন তিনি।
ভোটের আগের রাতে ভোটারদের আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বারুইপুর পূর্বের দক্ষিণ বেলেগাছি কানাপাড়া এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতি রাতভর গ্রামবাসীদের আটকে রেখে মারধর করেছেন। ভোট দিতে গেলে খেলা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে খবর দেওয়া সত্ত্বেও তারা আসেনি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হলো ভিভিপ্যাট ও ইভিএম। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাওড়ার উত্তর উলুবেড়িয়া বিধানসভায় গাঁতাইত পাড়ায়। জানা গেছে সেক্টর অফিসার ওই ভোটের সরঞ্জাম তৃণমূল নেতার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলেন। অভিযুক্ত সেক্টর অফিসারকে সাসপেন্ড করেছে নির্বাচন কমিশন।
রাতেই খবর জানাজানি হতে গৌতম ঘোষ নামে ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ। লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন উলুবেড়িয়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও।
প্রথম দুই দফার মতোই তৃতীয় দফাতেও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মোট ৬১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এই দফায়। এর মধ্যে ৩০৭ কোম্পানি মোতায়েন করা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগণাতে। হুগলি জেলায় ১৬৭ কোম্পানি এবং হাওড়াতে ১৪৪ কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। এছাড়াও প্রতি বুথে আধা সেনা রয়েছে।
সকাল ৭টা থেকে রাজ্যে শুরু হয়ে গেল তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ। ভোট শুরুর আগে থেকেই বুথে বুথে লম্বা লাইন লক্ষ্য করা গেল। এই দফায় তিনটি জেলার ৩১টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে রয়েছে হাওড়ার ৭টি, হুগলির ৮টি, দক্ষিণ ২৪ পরগণার ১৬টি কেন্দ্র।
হাওড়া - উলুবেড়িয়া উত্তর, উলুবেড়য়া দক্ষিণ, শ্যামপুর, বাগনান, আমতা, উদয়নারায়ণপুর, জগত্বল্লভপুর।
হুগলি - জাঙ্গিপাড়া, হরিপাল, ধনেখালি, তারকেশ্বর, পুরশুড়া, আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা - বাসন্তী, কুলতলি, কুলপি, রায়দিঘি, মন্দিরবাজার, জয়নগর, বারুইপুর পূর্ব, বারুইপুর পশ্চিম, ক্যানিং পূর্ব, ক্যানিং পশ্চিম, মগরাহাট পূর্ব, মগরাহাট পশ্চিম, ডায়মন্ড হারবার, পলতা, সাতগাছিয়া, বিষ্ণুপুর।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন