অবিশ্রান্ত বৃষ্টি এবং গঙ্গার জল বেড়ে যাওয়ায় আরও একবার প্রয়াগরাজে চাপা দেওয়া মৃতদেহর ঘটনা সামনে এলো। গঙ্গার জল বেড়ে যাওয়ার কারণে বালিতে চাপা দেওয়া মৃতদেহগুলো বেরিয়ে এসেছে এবং স্থানীয় প্রশাসন দিন রাত কাজ করে সেই দেহ দাহ করার ব্যবস্থা করছে।
এই ঘটনার একাধিক ছবি স্থানীয় সাংবাদিকরা তুলেছে যা আরও একবার বিতর্ক বাড়িয়ে তুলতে পারে। গত বুধবার এরকমই এক ছবি তোলা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে নদীর পাড়ে একটি দেহ পড়ে আছে। যে মৃতদেহর এক হাতে সাদা সারজিক্যাল গ্লাভস আছে। দেহ মোড়া আছে গেরুয়া কাপড়ে। প্রয়াগরাজ পুরসভার পক্ষ থেকে ওই দেহ দাহ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্য একটি ঘাট থেকে তোলা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দুই ব্যক্তি গঙ্গার জল থেকে গেরুয়া কাপড়ে মোড়া একটি দেহ টেনে তুলে বালিতে রাখছেন।
প্রয়াগরাজ পুরসভার জোনাল অফিসার নীরজ কুমার সিং এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তিনি ৪০টি দেহ দাহ করেছেন। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি আরও জানিয়েছেন সমস্ত রকমের নিয়ম মেনে মৃতদেহগুলোকে আলাদা আলাদা করে দাহ করা হচ্ছে।
একটি মৃতদেহর মুখে অক্সিজেন টিউব দেখা গেছে। এই প্রসঙ্গে নীরজ জানিয়েছেন এই দেহ দেখে বোঝা যাচ্ছে ওই ব্যক্তি মৃত্যুর আগে অসুস্থ ছিলেন। তিনি বলেন, সম্ভবত, মৃতদেহ এখানেই চাপা দিয়ে পরিবারের লোকজন চলে গেছে। হতে পারে তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন। আমার পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।
সূত্র অনুসারে, বেশ কিছু দেহে এখনও পচন ধরেনি। যার অর্থ সম্প্রতি সেই দেহগুলোকে বালিতে চাপা দেওয়া হয়েছে।
প্রয়াগরাজের মেয়র অভিলাষ গুপ্ত নন্দী সাংবাদিকদের জানান, রাজ্যের অনেক সম্প্রদায়ের মধ্যেই দেহ পুঁতে দেবার রীতি আছে। কাদায় দেহ পুঁতে দিলে সেই দেহ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু বালিতে পুঁতলে সেই দেহ অবিকৃত থেকে যায় বেশ কিছুটা সময়। তিনি এই সমস্ত ঘটনার ছবি এবং ভিডিওগ্রাফী করে রাখছেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, যেখানে যেখানে এরকম দেহ পাওয়া যাচ্ছে আমরা সেগুলো এনে দাহ করার ব্যবস্থা করছি।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের বিভিন্ন জায়গায় গঙ্গার পাড়ে এইভাবে মৃতদেহ পুঁতে দেবার ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে গত মে মাসে শোরগোল উঠেছিলো। যেখানে এই মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছিলো।
সেই সময় এই সমস্ত ঘটনার ছবি জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এবং সাধারণ মানুষ মনে করেন এই সমস্ত মৃত্যুই কোভিডের কারণে। উত্তরপ্রদেশ সরকার কোভিডে মৃত্যু সংখ্যা কম করে দেখিয়েছে বলেও তাঁদের অভিমত।
যদিও উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই সমস্ত মৃত্যু কোভিডের কারণেই হয়েছে বলে করা দাবি অস্বীকার করা হয় এবং জানানো হয় গঙ্গার তীরে এভাবে মৃতদেহ পুঁতে দেবার বহু পুরোনো প্রথা।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।