মহাকুম্ভের দ্বিতীয় শাহী স্নান, হরিদ্বারে কোভিড বিধি শিকেয়

প্রতিদিনই কয়েকশ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে মারণ ভাইরাস। কিন্তু আমজনতার যে বিন্দুমাত্র হুঁশ নেই তা প্রমাণ করে দিল শাহি স্নান উপলক্ষ্যে রবিবার হরিদ্বারে গঙ্গা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা লক্ষাধিক মানুষ।
হরিদ্বারে কুম্ভমেলার দ্বিতীয় শাহী স্নান
হরিদ্বারে কুম্ভমেলার দ্বিতীয় শাহী স্নানছবি ট্যুইটারের সৌজন্যে

সোমবার ভোর চারটেয় হরিদ্বারে শুরু হয়েছে এবারের কুম্ভ মেলার দ্বিতীয় শাহি স্নান। দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখের গন্ডি ছাড়িয়ে দুই লাখ ছুঁতে চলেছে। প্রতিদিনই কয়েকশ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এই মারণ ভাইরাস। কিন্তু আমজনতার তাতে যে বিন্দুমাত্র হুঁশ নেই তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল শাহি স্নান উপলক্ষ্যে রবিবার উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে গঙ্গা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা লক্ষাধিক মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশগুলির মধ্যে একটি - কুম্ভ মেলায় প্রার্থনা জানাতে এসেছেন এঁরা। দূরত্ব বিধি মানা তো দূরের কথা, অধিকাংশেরই মুখে ছিল না মাস্ক।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে লক্ষাধিক ভক্তরা গঙ্গা নদীতে ডুব দিতে এসেছেন। কুম্ভ মেলায় আসা ভক্তদের জন্য উত্তরাখণ্ড সরকার RT-PCR পরীক্ষার রিপোর্ট নেতিবাচক হওয়া বাধ‍্যতামূলক ঘোষণা করলেও অধিকাংশের কাছেই তা ছিল না। ভক্তদের দাবি, কোভিড-১৯ এখন আর কোনো উদ্বেগের বিষয়ই না।

প্রতি ১২ বছর অন্তর হওয়া কুম্ভ মেলা এই বছর এমন এক অসাধারণ পরিস্থিতির মধ্যে হচ্ছে, যখন গোটা বিশ্বের মধ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে ভারত দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হরিদ্বারের সমস্ত ঘাটে কঠোরভাবে কোভিড বিধি পালনের জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বারবার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশিকা-অনুরোধকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন ভক্তরা। তাঁদের দাবি, তীর্থযাত্রা নিয়ে এই নির্দেশিকা জারি ঠিক হয়নি। তীর্থযাত্রার সময় নির্দেশিকা মানা কার্যত অসম্ভব।

ভিড় নিয়ন্ত্রণ যে কার্যত অসম্ভব তা স্বীকার করে নিয়েছেন মেলা পুলিশ অফিসার আইজি এসকে গুন্জ‍্যাল। তিনি জানিয়েছেন, "ভিড় পরিচালনা করা খুব চ্যালেঞ্জের বিষয়। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইনস রয়েছে। সাধারণ জনগণের জন্য ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত SOP-ও জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ জনগণকে হরিদ্বার কুম্ভ অঞ্চলে আসতে হলে নেতিবাচক RT-PCR রিপোর্ট, একটি মেডিকেল শংসাপত্র এবং পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে।"

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১,৬৮,৯১২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯০৪ জনের। দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ২৭ হাজার ৭১৭। উত্তরাখণ্ডে শেষ ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩১৩ জন। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৮ হাজার ৮১২ জন।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in