Purulia: ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, ১০ একর জায়গা জুড়ে ফিল্ম সিটি - ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

তিনি বলেন, "বিগত কয়েক বছরে এখানে অনেক সিনেমার শুটিং হয়েছে। এখনও হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে। তাই ফিল্ম সিটি গড়ার জন্য ১০ একর জমি দেব।"
Purulia: ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, ১০ একর জায়গা জুড়ে ফিল্ম সিটি - ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
গ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন

তিনদিনের জঙ্গলমহল সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল (৩০শে মে) পুরুলিয়াতে প্রশাসনিক সভা করেন তিনি। সেই সভা থেকেই রাজ্য পর্যটন বিভাগ ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ফিল্ম-সিটি তৈরিতে বেসরকারি বিনিয়োগে ১০ একর জমি দেবেন বলে জানান তিনি। পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা এই জেলায় ফিল্ম-সিটি গড়ার প্রস্তাবনা ঘোষণা করার পাশাপাশি আরও নানা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

গতকালের প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তাঁকে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই সভায় উপস্থিত একটি পর্যটন সংস্থাকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন ফিল্ম সিটি নির্মাণের ব্যাপারটি পর্যালোচনা করতে। এই ফিল্ম-সিটি নির্মাণের কাজে মুখ্যমন্ত্রী ‘চেম্বার অফ কমার্স’-কে এগিয়ে আসার বার্তা দেন। তিনি বলেন, "বিগত কয়েক বছরে এখানে অনেক সিনেমার শুটিং হয়েছে। এখনও হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে। তাই ফিল্ম সিটি গড়ার জন্য ১০ একর জমি দেব।" শুধু ফিল্ম-সিটিই নয়, একে ঘিরে ফিল্ম ট্যুরিজমের প্রসার ঘটবে। যার ফলে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আরও চাঙ্গা হবে। অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে আশা করা যায়।

ফিল্ম-সিটি নির্মাণ ও পর্যটন শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি, সেদিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী, শিল্পশহর-রঘুনাথপুরকে কর্মনগরী তৈরির প্রকল্পে ৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা বলেছেন। তিনি জঙ্গলমহলের এই দূরের জেলার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসাধনে ব্রিটিশ আমল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা, ছরড়া'র ছোট বিমানবন্দর চালু করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই এই কাজটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ছরড়ায় বিমানবন্দর হবে। পুরুলিয়ার কমিউনিকেশন বাড়ানোর প্রয়োজন।”

পুরুলিয়া জেলার পর্যটনের প্রসারে হোটেল বা হোম-স্টে পরিষেবা আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই জেলায় ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের সাথে পর্যটনকে জুড়ে দেওয়ার ফলে প্রকল্পের জায়গাগুলি পর্যটকদের দেখার জায়গা হয়েছে। এখানেও হোম-স্টে তৈরি করার প্রস্তাব দেন মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়।

ফিল্ম-সিটি, হোম-স্টে এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে পুরুলিয়া জেলাকে শুধু দেশে নয় বিদেশী পর্যটকদের কাছেও পর্যটনের গন্তব্য করে তুলতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার অন্যতম কারণ হল এই জেলার ভৌগলিক বৈচিত্র্য। এই জেলায় যেমন পাহাড় রয়েছে, তেমনই রয়েছে জঙ্গল, আর আছে শুষ্ক মালভূমি, তারসাথে জলাধারও। পুঞ্চায় অবস্থিত জৈন-স্থাপত্য পাকবিড়রার মন্দিরকে হেরিটেজ ঘোষণা করেন এবং ওই পর্যটন প্রকল্পে প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই দু’কোটি টাকা (পর্যটন বিভাগ থেকে এক কোটি এবং তথ্য-সংস্কৃতি বিভাগ থেকে এক কোটি টাকা) বরাদ্দ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া জেলায় সর্বপ্রথম শ্যুটিং হয় ১৯৭৯ সালে। সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’-র ছবির শুটিং হয় পুরুলিয়ার জয়চন্ডী পাহাড়ে। তারপর অগণিত সিনেমার শ্যুটিং হয়েছে। বাংলা, হিন্দির পাশাপাশি ভারতের অন্যান্যপ্রান্তের পরিচালকরাও এই অদ্ভূত সুন্দর ল্যান্ড-স্কেপের টানে শ্যুটিং করতে এসেছেন পুরুলিয়ায়। শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, সুদূর ইতালির পরিচালক ইতালো স্পিনেল্লির ‘গাঙ্গোর’ ছবির শ্যুটিং করতে পুরুলিয়ায় আসেন।

পরিচালক ও প্রযোজকদের সুবিধার্থে, পুরুলিয়ায় এই ফিল্ম-সিটি তৈরি হলে আরও অনেক বেশি সিনেমাদল কাজ করতে এখানে আসবে। পর্যটকরাও ঘুরতে আসবেন। ফলে, পর্যটন শিল্পের উন্নতি হবে এবং কর্ম-সংস্থানের আশা দেখছেন জেলাবাসীরা।

Purulia: ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, ১০ একর জায়গা জুড়ে ফিল্ম সিটি - ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
'কুড়মালি ভাষাতেও কবিতা লিখেছি' - পুরুলিয়ায় বললেন মমতা ব্যানার্জী

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in