গোরু পাচারকাণ্ডে ইতিমধ্যেই ১৪ দিনের সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ঠিক এরই মাঝে সিবিআই-র কাছে বিষ্ফোরক বয়ান দিলেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী।
শুক্রবার সকালে সেই চন্দ্রনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। বোলপুরের এই চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে অনুব্রতর চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় খোঁজখবর নেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু এবং অনুব্রতর চিকিৎসক ডাক্তার চন্দ্রনাথকে চিঠি পাঠিয়েছিল সিবিআই। তারপরই সিবিআই-র মুখোমুখি হন চন্দ্রনাথ। সিবিআই সূত্রের খবর, সংবাদমাধ্যমের সামনে চন্দ্রনাথ ঠিক যা যা বলেছিলেন, সিবিআইকেও তাই বলেছেন।
চন্দ্রনাথের কথায়, গত মঙ্গলবার অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে তাঁর বাড়িতে যান তিনি। তাঁর দাবি, সেখানে ‘রোগী’ অনুব্রত নিজেই তাঁকে ১৪ দিনের ‘বেড রেস্ট’ লিখে দিতে বলেন। আর সেটাও কোনও ডাক্তারি প্যাডে নয়, একটি সাদা কাগজে লিখতে হয়েছে। এই পুরো কাজই হাসপাতালের সুপারের নির্দেশে করতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই চিকিৎসক।
এর পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের ঠিক কী কী শারীরিক সমস্যা রয়েছে সেটাও চন্দ্রনাথের কাছে জানতে চেয়েছে সিবিআই। উত্তরে তিনি জানান, অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর সমস্যাগুলো হাসপাতালে এসে জানাতে বলেছিলেন চন্দ্রনাথ। কিন্তু হাসপাতাল সুপারের নির্দেশে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন অনুব্রতর বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করতে।
গত বুধবার, গোরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের দশম সমন এড়িয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। আর এই সঙ্গে প্রকাশ্যে এসেছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর ‘স্বীকারোক্তি’।
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুকে বারবার তলব করেও কোনও উত্তর পায়নি সিবিআই। ছুটিতে থাকাকালীন কীভাবে তিনি ডাক্তারকে অনুব্রতর বাড়ি গিয়ে চিকিৎসার নির্দেশ দিলেন সেই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই বুদ্ধদেবের ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় ছুটির জন্য আবেদন করেছেন তিনি। অন্যদিকে চন্দ্রনাথ অধিকারীও ছুটিতে আছেন। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেছেন।
বিরোধীদের প্রশ্ন, অনুব্রত কোনও মন্ত্রী বা বিধায়ক নন, তাহলে মেডিক্যাল টিম নিয়ে তাঁর বাড়িতে কেন গেলেন সরকারি চিকিৎসকেরা? এ নিয়ে চন্দ্রনাথবাবু জানাচ্ছেন, তিনি নিমিত্ত। যা করেছেন, সবই সুপারের নির্দেশে। অন্য দিকে সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর সঙ্গে বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। মাঝেমাঝে তাঁর মোবাইল ফোন খোলার মেসেজ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ফোন করলে পর ক্ষণেই তিনি ‘নট রিচেবল’!
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।