রাজ্যে চাকরি গেল আরও ৮৪২ জনের। শুক্রবার গ্রুপ সি পদে ৭৮৫ জনের চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বাতিল হবে সুপারিশপত্র ছাড়াই নিয়োগ হওয়া আরও ৫৭ জনের চাকরি। যে ৫৭ জনের নাম ইতিমধ্যেই নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিস কমিশন।
এর পাশাপাশি এদিন আদালত আরও জানিয়েছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই সমস্ত পদে নতুন বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে কমিশনকে। এক্ষেত্রে ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের মধ্যে থেকে নতুন নিয়োগ করতে হবে।
শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই কোনোরকম সুপারিশপত্র ছাড়াই চাকরিতে যোগ দেওয়া ৫৭ জনের নাম দু’ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ মেনে দু’ঘণ্টার আগেই নিজেদের ওয়েবসাইটে সেই তালিকা প্রকাশ করে কমিশন।
এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, আজ থেকেই আর স্কুলে ঢুকতে পারবেন না এই গ্রুপ সি কর্মীরা। আগামীকাল শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই ৭৮৫ জনের চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যদিও চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেও তাঁদের বেতন ফেরতের কোনো নির্দেশ এদিন আদালতের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসি-র দেওয়া সুপারিশপত্রের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যদিও ৫৭ জনের ক্ষেত্রে এই সুপারিশপত্র ছিলনা।
শুক্রবার কমিশনের কাছে হাইকোর্ট জানতে চায় সুপারিশ করা হয়েছে এরকম কতজনের ওএমআর শিটে কারচুপি করা হয়েছে? এর উত্তরে স্কুল সার্ভিস কমিশন ৭৮৫ জনের কথা জানায়। এরপরেই বিচারপতি আগামীকাল দুপুর বারোটার মধ্যে ৭৮৫ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। জানা যাচ্ছে সুপারিশপত্র ছাড়া ৩৮১ জন নিয়োগ পেয়েছেন।
এর আগেও ধাপে ধাপে একাধিকবার রাজ্যে চাকরি বাতিল হয়েছে। ২০১৬ সালের ওএমআর শিট দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ গ্রুপ ডি-র ১৯১১ জনের নিয়োগ বাতিল হয়।
এদিন ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমে বলেন, খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আগে চাকরি প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ হত। এখন চাকরি বাতিলের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে। দুর্নীতির চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে সব। এখন মানুষ অপেক্ষা করছে কত দ্রুত এই পদে নিয়োগ শুরু হবে তার জন্য। যারা চাকরি হারালেন তারা একদিকে যেমন প্রতারিত তেমনই একদিকে প্রতারক। কারণ কাউকে না কাউকে বঞ্চিত করে তারা চাকরি করছিলেন। এঁরা যে বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়েছিলেন সেই টাকা কোথায় গেল? সেই তদন্তও হওয়া দরকার।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।