যত দিন যাচ্ছে, ততই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা, যার জেরে দেশে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের গন্ডি পেরিয়ে চার হাজারের পথে। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসেই সেফ হোম তৈরি করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ল্যাবের অক্সিজেন সিলিন্ডার করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করার দাবি জানিয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে চিঠি লিখল বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI ইউনিটের সদস্যরা।
করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পঠনপাঠন বন্ধ রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বড় বড় ঘরগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে না সেগুলোকে সেফ হোম হিসেবে ব্যবহার করার দাবি জানিয়েছে SFI। উপাচার্যকে লেখা চিঠিতে SFI জানিয়েছে, "এই মুহূর্তে আমরা এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলামেলা, প্রশস্ত জায়গাগুলো যেমন এসি ক্যান্টিন, টেক্যুইপ বিল্ডিং, গেস্ট হাউস, প্রযুক্তি ভবন, সল্টলেক ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাস বা অন্য কোনো উপযুক্ত জায়গায় যদি সেফ হোমের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ভালো হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে আমরা সকলে এই প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব বোধ করছি খুব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষার্থী, প্রফেসর, ওয়ার্কিং স্টাফ ও তাঁদের পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে যে সমস্ত হকাররা থাকেন, যাঁরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন, এই সেফ হোমগুলিতে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হোক।"
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে প্রশাসনিক আধিকারিকদের মধ্যে। এর পাশাপাশি উপাচার্যকে লেখা আর একটি চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে পড়ে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো কোভিড রোগীদের চিকিৎসার কাছে ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছে SFI। তাঁরা নিজেরাই রোগীদের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেবে বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে, এই বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন উপাচার্য। পড়ুয়াদের এই উদ্যোগে খুশি তিনি। উপাচার্যের কাছে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে কাজেও নেমে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI ইউনিটের সদস্যরা।
গত বছর মহামারী পর্বের শুরুতে এই পড়ুয়ারাই কখনও স্বল্প দামের মাস্ক, স্যানিটাইজার তৈরি করেছেন। আবার কখনও 'কমিউনিটি কিচেন' খুলে সাধারণ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। গত বছর দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে যাদবপুরের পড়ুয়াদের উদ্যোগেই তৈরি হয়েছিল ‘যাদবপুর কমিউন'।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।