তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনের মামলায় হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। রাজ্যের আবেদন খারিজ করে সিবিআই তদন্ত বহাল রাখল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায়ে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন নিহত তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। পাশাপাশি স্বামীর খুনের জন্য রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়কে সরাসরি দায়ী করেছেন তিনি।
তপন দত্ত খুনের মামলায় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ও বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ আদালতের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কেই সম্মতি দিল। আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, বিচারপতি রাজশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ একদম ঠিক।
এই পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মামলার সিবিআই তদন্ত হবে। সিআইডি আসল অপরাধীদের ধরতে ব্যর্থ। তাই সাধারণ মানুষের আস্থা বজায় রাখতে তদন্তকারী সংস্থাকে পরিবর্তন করা হোক। অর্থ ও রাজনৈতিক ফায়দা যাঁরা তুলতে চেয়েছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে হয়তো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তপন দত্ত। তাই তাঁকে খুন হতে হয়।
চলতি বছরের ৯ জুন রাজশেখর মান্থার সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই আদালতে যায় রাজ্য সরকার ও অভিযুক্ত ষষ্ঠী গায়েন। কিন্তু আজ রাজ্যের বিপক্ষেই যায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়।
রায়দানের পর নিহত তপন দত্তের স্ত্রী রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, তাঁর স্বামীকে খুন হতে হয় অরূপ রায়ের চক্রান্তেই। অরূপ রায়ের চক্রান্ত ফাঁস হবেই।
যদিও প্রতিমা দত্তের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অরূপ রায়। তাঁর বক্তব্য বিচারাধীন বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না।
প্রতিমা দত্ত আরও বলেন, আমি জানতাম সত্যের জয় হবেই। আমি ১২ বছর অপেক্ষা করেছি। এই রায়ে আমি খুশি হয়েছি। আমি বলেছিলাম সিআইডিকে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। এই রাজ্য সরকার তদন্ত করতে দেয়নি। এই কষ্টটা আমার ছিল। বিকাশবাবু (আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য) জিতবেন সেটা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।
আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জী বলেন, আদালতের রায় একদম সঠিক। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত যখন ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা রেফার করেছিলেন, তিনি পয়েন্ট আউট করেছিলেন যে, মামলাকারী পুনরায় তদন্ত চাইছেন সিবিআই দ্বারা। পরে ট্রায়াল জাজ দেখলেন সিআইডি যে তদন্ত করেছে তা সঠিক হয়নি। কারণ প্রথম যে চার্জশীট দেওয়া হয় তাতে অরূপ রায় সহ একাধিক তৃণমূল নেতাদের নাম ছিল। কিন্তু পরে যে চার্জশীট পেশ করা হয় তাতে অরূপ রায় সহ বেশকিছু তৃণমূল নেতার নাম বাদ যায়।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।