দিল্লির খোড়ি গাঁও এলাকা খালি করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, মাথায় হাত কয়েক লাখ বাসিন্দার

এই এলাকার বাসিন্দারা মূলত অন্যান্য রাজ্যের অভিবাসী। দিল্লি এনসিআরে এসে বসবাস শুরু করে আশেপাশে কাজ খোঁজেন। বেশিরভাগ বাসিন্দাদের ঘরেই নেই বিদ্যুৎ সংযোগ বা জলের লাইন।
দিল্লির খোড়ি গাঁও এলাকা খালি করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, মাথায় হাত কয়েক লাখ বাসিন্দার
ছবি- ন্যাশনাল হেরাল্ড-এর সৌজন্যে

বিগত ৪০ বছর ধরে বসবাসকারী শ্রমিকদের বাসস্থান উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লি এনসিআর-এর ফরিদাবাদের সুরজকুণ্ড এলাকার খোড়ি গাঁওয়ের ঘটনা। শীর্ষ আদালতের এমন নির্দেশের পর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়েছেন এখানকার লাখো বাসিন্দা।

এই এলাকার বাসিন্দারা মূলত অন্যান্য রাজ্যের অভিবাসী। দিল্লি এনসিআরে এসে বসবাস শুরু করে আশেপাশে কাজ খোঁজেন। বেশিরভাগ বাসিন্দাদের ঘরেই নেই বিদ্যুৎ সংযোগ বা জলের লাইন। এলাকার মোট ৫ টি স্কুল রয়েছে। সেই স্কুলগুলোও ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হরিয়ানা আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ২০১০ সালে নির্দেশ দেয়, খোরি এলাকায় ২০০৩ সাল থেকে বসবাসকারী মানুষরাই একমাত্র পুনর্বাসন পাবেন। এই নীতির ভিত্তিতেই পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় এলাকার সমস্ত বাসিন্দার পুনর্বাসনের দাবিতে। কিন্তু একাধিক শুনানির পরও হাইকোর্ট কোনও ত্রাণ দিতে অস্বীকার করে। মামলাটি এখনও সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে।

এদিকে, আইনজীবী গুঞ্জন সাক্সেনা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর ঘর হারানোর ভয়ে আত্মহত্যা করেছেন বহু বাসিন্দা। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খোরি এলাকার ১৭০০-র বেশি বাড়ি ভেঙে দেয় ফরিদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। এই শ্রমিকশ্রেণির মানুষদের পুনর্বাসনের দাবিতে ধর্নায় বসেন বন্ধুয়া মুক্তি মোর্চা এবং রাষ্ট্রীয় মজদুর আবাস সংঘর্ষ সমিতি।

২০২১ সালের ২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের জরুরি নির্দেশের পর ফের ৩০০ বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। যদিও তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে স্থগিতাদেশের আবেদন করা হয়, কিন্তু শীর্ষ আদালত তা শুনতে রাজি না হয়ে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এলাকা খালি করে বাড়িগুলো ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আর এতেই মাথায় হাত পড়েছে খোরি এলাকার বাসিন্দাদের।

এই বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং খোড়ি গাঁও-এর বাসিন্দাদের আইনজীবী কলিন গঞ্জালেস জানান – যদি খোড়ি গ্রামকে জঙ্গলের জমি হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সংলগ্ন গ্রামের হোটেল এবং ফার্মহাউসের জমিও জঙ্গলের জমি হিসেবে ফিরিয়ে দিতে হবে। বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময় এই ধরণের নির্দেশ অনৈতিক এবং বৈষম্য সৃষ্টিকারী।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট গত বৃহস্পতিবার হরিয়ানা সরকারকে এক নির্দেশে জানায় আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে ফরিদাবাদের আরবল্লী সংলগ্ন জমি পরিষ্কার করে দিতে হবে এবং সব জবরদখলকারীদের হঠাতে হবে।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in