লকডাউন তো। হয়তো কোনও ট্রেন আসবে না। দীর্ঘ পথ চলার মাঝে তাই ২০জন শ্রমিক একটু বিশ্রাম নিতে শরীরটা এলিয়ে দিয়েছিলেন রেললাইনে। কিন্তু মালগাড়িও যে আসতে পারে, সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা। কিন্তু এসেছিল। তার জেরে প্রাণ হারান ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক। মালগাড়ি চলে যাওয়ার পর পাওয়া গিয়েছিল শুকনো রুটি আর ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কিছু ছবি, যা দেখে সবাই শিউরে ওঠেন এক বছর পরও।
গতবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রেলওয়ে বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ৮৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারমধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক। ২০২০ সালের বেশিরভাগ সময় ট্রেন বন্ধ ছিল। চলছিল শুধু মালগাড়ি আর কিছু শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। বোর্ড জানিয়েছে, ৮৭০০ জনের যে হিসেবে পাওয়া গিয়েছে, তা বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে। রাজ্য পুলিশের থেকে পাওয়া সেই তথ্য অনুযায়ী, ৮০৫ জন ট্রেনের ধাক্কায় জখম হয়েছেন। রেললাইনে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭৩৪ জন। যদিও গত চার বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃতের সংখ্য এবার কম।
গত বছর মাত্র চার ঘণ্টার নোটিশে লকডাউন জারি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উপায়ন্তর না দেখে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ির পথে রওনা হয়েছিলেন হেঁটেই। ওই পরিযায়ীদের ধারণা ছিল, রেললাইন ধরে হাঁটলে অনেক বেশি তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে। এছাড়া পুলিশের হাত থেকে রক্ষা মিলবে। রাস্তা হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকবে না। ওই কুড়ি জন শ্রমিকও সেরকম হিসেব করেছিলেন। শেষপর্যন্ত ১৬ জনের আর মধ্যপ্রদেশের বাড়িতে ফেরা হল না। রেল অবশ্য এই ধরনের ঘটনাবলীকে দুর্ঘটনা বলে মনে করে না। তারা মনে করে অনধিকার প্রবেশ।
রেলের মুখপাত্র ডিজে নারাইন বলেন, রেলে ৭০ হাজার কিলোমিটার পথে প্রতিদিন সবসময় ১৭০০০ ট্রেন চলাচল করে। এই দীর্ঘ পথে সাধারণ মানুষের যাতায়াত রুখতে নানারকম নির্দেশিকা জারি হয়। রেলের পক্ষ থেকে আরও উন্নত সিগন্যালিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।