রক্তদান মানে জীবনদান। অথচ সেই রক্তেরই দাম এবার উচ্চহারে বাড়িয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি ব্লাডব্যাঙ্কে প্রসেসিং চার্জ করা হয়েছে ১১০০ টাকা।
এতদিন ধরে রক্তের প্রয়োজন হলে বেসরকারি ব্লাডব্ল্যাঙ্ক গুলিতে ৭০০ টাকার বিনিময়ে রক্ত পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু এবার মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এখন থেকে ডোনার মারফত এক বোতল রক্ত নিতে গেলেও দ্বিগুণ দাম দিতে হবে।
গত মঙ্গলবার বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ছিল। সেই উপলক্ষে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করার জন্য রক্তদাতাদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক দেশগুলির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলি সহ এ রাজ্যের রক্তদাতাদের সেখানে আমন্ত্রণ করা হয়। সেইদিনই ওই সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রক্তের দামের উপর নয়া মূল্য ঘোষণা করা হয় বলে সূত্রের খবর। আর সেই দর অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে রক্তের দাম।
বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের প্রয়োজন হলে অনেক সময়ই তা পাওয়া যায় না। রক্তের চাহিদার সাথে যোগানের বিপুল ঘাটতি থেকে যাওয়ায় রক্ত সংকট দেখা যায়। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে ডোনার নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। এতদিন ডোনার নিয়ে রক্ত সংগ্রহ করতে গেলে বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কগুলিতে ৬০০ টাকার বেশি সার্ভিস চার্জ দিতে হত। কিন্তু কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এবার থেকে ডোনার নিয়ে রক্ত নিতে গেলেও এক বোতল রক্তের জন্য দিতে হবে ১৫০০ টাকা। আবার অন্যদিকে যদি বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কে প্রয়োজনীয় রক্ত পাওয়া যায় তাহলেও রোগীর পরিবারকে ১৫০০ টাকা দিতে হবে এক বোতল রক্তের জন্য।
মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজকরা জানিয়েছেন, এইভাবে চড়া হারে রক্তের দাম বৃদ্ধির অর্থ হল এই দামকেই ন্যূনতম দাম হিসেবে দেখতে চাইবে বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্ক গুলো। এর ফলে চাহিদার সংকট আছে বলে ১৫০০ টাকা থেকে ক্রমাগত বাড়তে থাকবে রক্তের দাম। ফলে কোনও পরিবারের যদি রক্তের প্রয়োজন হয় তবে বেশি দামেই তাঁদের রক্ত কিনতে হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে কেন্দ্রের স্বাস্থমন্ত্রকের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সরকারি ও বেসরকারি কোনও ব্লাডব্যাঙ্কেই রক্তের জন্য নির্দিষ্ট করে দাম ধার্য করা থাকবে না। যার ফলে রাজ্য সরকারও রক্তের মূল্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। রাজ্যের বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কগুলি নিজেদের খুশি মতই রক্ত বিক্রি করেছে এতদিন।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে রক্তের দাম বৃদ্ধি নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার জেরে স্বাস্থ্যভবনে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। সেদিনই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীন ডাইরেক্টর জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসের অতিরিক্ত অধিকর্তা ডঃ অনিল কুমার দেশের প্রতিটি রাজ্যের ব্লাড ট্রান্সফিউশান কাউন্সিলের ডিরেক্টরদের চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতেই দাম বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করা আছে। এর সাথে সরকারি ব্লাড সেন্টারের প্রসেসিং চার্জ ও বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কের রক্তের দাম কত হবে তা বলা আছে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।