বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সঙ্গে এনডিএ-র দূরত্ব ক্রমশই বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বিষয়ে নীতিশ কুমার এনডিএ বিরোধী মত প্রকাশ করেছেন। যে তালিকায় আছে পেগেসাস, জাতি ভিত্তিক জনগণনা প্রভৃতি। এনডিএ বিরোধিতার সুর বজায় রেখেই এবার সরাসরি রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিলেন জেডিইউ প্রধান নীতিশ কুমার।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বলেন, বিহারে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইনের কোনো প্রয়োজন নেই। যদি কোনো রাজ্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন আনে এবং তা সেই রাজ্যে চালু করে সেই বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এরকম কিছু হবেনা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একাধিক রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন চালু করার দাবি ওঠার পর নীতিশ মন্ত্রীসভার বেশ কিছু বিজেপি সদস্য বিহারে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন চালু করার দাবি জানান।
এর আগেও এই প্রসঙ্গে নীতিশ কুমার জানিয়েছিলেন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। আইন করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়না বলেই জানিয়েছিলেন এনডিএ শরিক জেডিইউ নেতা নীতিশ কুমার।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে, বিহারে সচেতনতা বাড়িয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে আছে। জন্মহার ৫ শতাংশ থেকে কমে ৪ শতাংশ হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে এই হার কমে ২ শতাংশে আসবে বলেও দাবি করেছেন নীতিশ কুমার।
উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত যোগী আদিত্যনাথ পরিচালিত উত্তরপ্রদেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিলের খসড়া প্রকাশিত হবার পর থেকেই একাধিক রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও খোদ উত্তরপ্রদেশেই প্রস্তাবিত এই বিল নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে যোগী সরকার। এমনকি এই সমালোচনা এসেছে আরএসএস-এর দিক থেকেও।
যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে নীতিশ কুমারকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। নীতিশকুমারের সমর্থনের মূল ভিত্তি ওবিসি, ইবিসি এবং দলিতরা। সেই অংশকেই নীতিশের থেকে দূরে সরাতে তৎপর বিজেপি। এর পালটা হিসেবে নীতিশ কুমারও বিজেপির ওপর চাপ বাড়াতে জাতি ভিত্তিক জনগণনায় জোর দিচ্ছেন। যদিও রাজ্য বিধানসভায় আসনসংখ্যার ভিত্তিতে সংখ্যালঘু নীতিশ কুমারের সামনে আগামীদিনে খুব বেশি বিকল্প খোলা নেই।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।