বাংলাদেশ: ডলারের বিপরীতে আরও কমলো টাকার মান

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকীগ্রাফিক্স সুমিত্রা নন্দন

বাংলাদেশে মার্কিন ডলারের বিপরীতে আবারও টাকার মান ৪০ পয়সা কমিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতি মার্কিন ডলারের দাম পুনর্নির্ধারণের মধ্য দিয়ে ২৭ দিনের ব্যবধানে টাকার দরপতন হলো ১ টাকা ৭০ পয়সা। সোমবার (২৩ মে) মার্কিন ডলারের দাম পুনর্নির্ধারণের কারণে আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা। একদিন আগেও প্রতি এক ডলার কিনতে খরচ হয়েছিল ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে জানুয়ারির শুরুতে ডলারের বিনিময়মূল্য ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা করা হয়েছিল, ২৩ মার্চ তা আবার ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা করা হয়।

গত ২৭ এপ্রিল বাড়ানো হয় ২৫ পয়সা। তাতে ১ ডলারের বিনিময়মূল্য দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। ৯ মে ডলারের বিনিময়মূল্য ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গত ১৬ মে টাকার বিপরীতে ডলারে মূল্য ৮০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। ডলারের দাম বাড়ায় আলোচ্য হারে টাকার মান কমেছে।

এক বছর আগে অর্থাৎ গত বছরের মে মাসে প্রতি ডলার আন্তঃব্যাংকে বিক্রি হয়েছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা দরে। ওই সময়ে ডলারের দাম বাড়ল এক টাকা ৯০ পয়সা।

৫০০ কোটি ডলার বিক্রি

গত অর্থবছর বিভিন্ন ব্যাংকের হাতে উদ্বৃত্ত ৭৯৪ কোটি ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও একের পর এক রেকর্ড হতে থাকে। সব শেষ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে বৈদেশিক মুদ্রার আয় কম হচ্ছে বর্তমানে। এতে চাপ বাড়ছে রিজার্ভে।

এ অবস্থায় বিলাসী পণ্য আমদানিতে ৭৫ শতাংশ এলসি মার্জিন নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসময়ে আমদানি দায় পরিশোধে কেউ যেন ব্যর্থ না হয় এই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তফসিলি ব্যাংকগুলোর কাছে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে।

গত ১০ মে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রির মধ্য দিয়ে চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত মোট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০২ কোটি ডলার। বিপরীতে বাজার থেকে এসেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

উদ্বৃত্তের চাপ কমাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মোট ৭৯৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ। এর বিপরীতে বিক্রি করেছিল মাত্র ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছিল ৮৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ওই সময়ে বিক্রি করেছিল ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ডলার না কিনলেও সে সময়ে ২৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছিল। এরও আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিক্রি করেছিল ২৩১ কোটি ১০ লাখ ডলার। বর্তমানে নগদ ডলার (খোলা বাজার) কিনতে ডলার প্রতি ব্যয় করতে হচ্ছে ৯৩ টাকা পর্যন্ত।

ছবি প্রতীকী
বাংলাদেশ কি অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে চলেছে?

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in